লালবাবা কলেজে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে বালি থানার ভিতরেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। এই ঘটনায় বালি কেন্দ্রের তৃণমূল যুব সংগঠনের সভাপতির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলেন কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র সংসদের সদস্যেরা। শনিবার এর প্রতিবাদে বালি থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
পুলিশ জানায়, ওই কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামল কর্মকার ৩ সেপ্টেম্বর বালি থানায় অভিযোগ করেন, কয়েক মাসে কলেজ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার জিনিস চুরি হয়েছে। তদন্তের জন্য শুক্রবার পুলিশ কলেজের ৬ কর্মীর সঙ্গে তিন ছাত্রকেও ডেকে পাঠায়। তাঁরা চলে গেলে লোকজন-সহ থানায় যান যুব সংগঠনের সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার ওরফে নান্টু। কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র সংসদের সদস্যেরাও থানায় এলে গোলমাল হয়। অভিযোগ, ছাত্র সংসদের পর্যবেক্ষক রঞ্জন ভট্টাচার্য ও ছাত্র পরিষদের সদস্যদের থানার ভিতরেই মারেন প্রাণকৃষ্ণরা। |
চুরির তদন্তের অগ্রগতি ও মারধরে মূল অভিযুক্ত প্রাণকৃষ্ণকে গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার পুলিশকে ডেপুটেশনও দেয় ছাত্র সংগঠন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে প্রাণকৃষ্ণকে পদ থেকেও বরখাস্ত করতে হবে। এই ঘটনা বালিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে প্রকাশ্যে এনে দিল বলে মত দলের একাংশের। কারণ, প্রাণকৃষ্ণবাবু হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। আবার কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি বিধায়ক সুলতান সিংহ।
এই ঘটনাকে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব বলে মানতে রাজি নন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, “বালির বিধায়ককে বলেছি দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে দিতে। কেউ দলীয় নীতি অমান্য করলে তাঁকে দলের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।” এই বার্তা প্রাণকৃষ্ণর জন্য কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এই নির্দেশ সবার জন্য। তবে প্রত্যেক একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। পুলিশ তদন্ত করবে।” এ দিকে বালির বিধায়ক সুলতান সিংহের বক্তব্য, “অরূপ রায়ের সঙ্গে আমার বিরোধ নেই। তবে প্রাণকৃষ্ণ কেন এমন করেছেন, তিনিই বলতে পারবেন।” প্রাণকৃষ্ণর কথায়, “অন্য একটি কাজে থানায় গিয়ে দেখি ছাত্র সংসদের পর্যবেক্ষক রঞ্জন ভট্টাচার্য ও ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা সেখানে। ওঁদের সঙ্গে আমদের কয়েক জনের বচসা হলে রঞ্জন তার ছবি তুলছিল। তখনই মারপিট হয়। আমি ওঁদের মারামারি করতে বারণ করি।”
|