শ্লীলতাহানির পুরনো ‘ঘটনা’ টেনে পথেঘাটে কটূক্তি করা হচ্ছিল মেয়েকে। প্রতিবাদ করতে যাওয়া ‘বাবা’কে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল পড়শি এক মহিলা-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের শ্রীকৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ প্রামাণিক (৪৭) নামে ওই ব্যক্তিকে গুরুতর অবস্থায় বাড়ির কাছে একটি জমি থেকে উদ্ধার করে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে তিনি মারা যান।
নিহতের পরিবার শনিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। পরিবারটির দাবি, বছর তিনেক আগে নারায়ণবাবুর মেয়ের শ্লীলতাহানি করে গ্রামের বাসুদেব অধিকারী-সহ চার যুবক। সালিশিতে তখনকার মতো মীমাংসা হলেও ওই যুবকেরা নারায়ণবাবু ও তাঁর মেয়েকে প্রায়ই কটূক্তি করত। শুক্রবার প্রতিবাদ জানাতে বাসুদেবের বাড়িতে যান নারায়ণবাবু। অভিযোগ, বাসুদেবের মা বাসন্তী অধিকারীর মদতেই নারায়ণবাবুকে বেধড়ক মারা হয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।” কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশ কেন অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করল? জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, যদি ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হত, বোঝা যেত হামলাকারীরা খুন করার মতলবে ছিল। এ ক্ষেত্রে হামলাকারীরা নারায়ণবাবুকে জখম অবস্থায় ফেলে চলে যায়। পরে তিনি মারা যান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের মনে হয়েছে, খুন নয়, মারধরই প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। তাই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।
তিন বছর আগে নারায়ণবাবুর মেয়ের শ্লীলতাহানি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ পুলিশের কাছে দায়ের হয়নি বলে জয়নগর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। গ্রামবাসীরাও নারায়ণবাবু ও তাঁর মেয়েকে কটূক্তি নিয়ে বা সালিশির ব্যাপারে আলোকপাত করতে পারেননি। তবে নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, “ওই যুবকদের হুমকির ভয়েই আমরা এত দিন চুপ ছিলাম। কিন্তু কটূক্তি সহ্যের সীমা ছাড়াচ্ছিল। তাই স্বামী প্রতিবাদ করেন। আর সে জন্যই তাঁকে প্রাণ দিতে হল।” নিহতের বছর আঠারোর মেয়ে বলেন, “পুরনো ঘটনা নিয়ে বাসুদেবরা বাবাকে নিয়মিত খোঁটা দিচ্ছিল। রাস্তাঘাটে যেখানে দেখতে পেত, আমাকেও টিটকিরি দিত। তাই প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল বাবা। চ্যালাকাঠ দিয়ে আমার এবং মায়ের সামনেই বাবার মাথায় মারা হয়। গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করেননি।” |