পথেই জন্ম, হাসপাতালে বিক্ষোভ
রীক্ষা করে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন সন্তান হতে এক মাস বাকি। এর দু’দিন পরেই হাসপাতালের পথে অ্যাম্বুল্যান্সে এক সন্তানের জন্ম দিলেন সেই প্রসূতি। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও সেই শিশুকে বাঁচানো গেল না। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের বিরুদ্ধে শুক্রবার গাফিলতির এই অভিযোগ তুলল প্রসূতির পরিবার। মৃত শিশুটির দেহ পাঁচ ঘণ্টা হাসপাতাল সুপারের টেবিলে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
পুরুলিয়া মফস্সল থানার সতেরো গ্রামের বাসিন্দা প্রসূতি পুষ্প কুইরির পেটে ব্যথা ওঠায় বুধবার বাড়ির লোকেরা তাঁকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাঁর স্বামী দীনেশ কুইরির দাবি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফির রিপোর্ট দেখে সে দিন হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, সন্তান হতে এক মাস বাকি। পুষ্পকে তিনি বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু ব্যথা বাড়ায় তাঁকে অনুরোধ করে পুষ্প বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। পরে বাড়ি ফিরে যান। এ দিন ভোরে ফের প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে পুষ্পকে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে আসছিলেন। রাস্তায় একটি সন্তানের জন্ম দেন পুষ্প। কিন্তু হাসপাতালে শিশু ও তার মাকে নিয়ে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় তাঁদের।
সুপারের টেবিলে সদ্যোজাতের দেহ।—নিজস্ব চিত্র
দীনেশের অভিযোগ, “জরুরি বিভাগে পুস্পদেবীকে নিয়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসক সদ্যোজাতের নাড়ি কাটেন। পরে শিশু ও মাকে তিন তলায় প্রসূতি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকেরা জানান ঠিক ভাবে নাড়ি কাটা হয়নি। ফের শিশু ও তার মাকে জরুরি বিভাগে ফিরিয়ে আনা হয়। সেখান থেকে ফের প্রসূতি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে শিশু-সহ পুষ্পকে উপর-নীচ করানো হয়। এই করতে গিয়ে বাচ্চাটা মারা গেল।”
বাচ্চাটির দেহ নিয়েই হাসপাতালে সুপারের অফিসে যান দীনেশবাবু ও তাঁর পরিবারের লোকজন। টেবিলের উপরে মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সুপারের কাছে তাঁরা জানতে চান, বুধবার ঠিক মতো পরীক্ষা না করে কেন চিকিৎসক তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলেছিলেন? দীনেশবাবুর ভাই মহাদেব কুইরির অভিযোগ, “পরীক্ষা করিয়ে এক মাস পরে বউদি সন্তানের জন্ম দেবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু দু’দিনের মধ্যে সেই সন্তানের জন্ম হল। হাসপাতালে বউদিকে ভর্তি রাখলে বাচ্চাটার এই পরিণতি হত না।” ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন তাঁরা। পরে তাঁরা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর কাছে তদন্তের আর্জি জানান। মন্ত্রীর আশ্বাস, “ঘটনাটি মর্মান্তিক। অভিযোগের তদন্ত হওয়া দরকার।”
হাসপাতালর সুপার নীলাঞ্জনা সেনের দাবি “রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্সে সন্তানের জন্ম হওয়ায় সেই সময় যে জরুরি চিকিৎসার দরকার ছিল তা পায়নি ওই শিশুটি। জরুরি বিভাগ থেকে প্রসূতি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ওয়ার্ড থেকে জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়নি।” তবে দু’দিন আগে চিকিৎসক কেন ওই প্রসূতিকে এক মাস পরে সন্তান হবে বলে ফেরত পাঠিয়েছিলেন তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এ দিন হাসপাতালে ওই চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.