দু’ ঘণ্টায় যক্ষ্মা নির্ণয়
মুর্শিদাবাদে বসছে ‘সিবিনাট’ যন্ত্র
রাজ্যের অন্যান্য এলাকার তুলনায় প্রান্তিক জেলা মুর্শিদাবাদে যক্ষ্মার প্রকোপ বরাবরই বেশি। অথচ সে জেলায় রাজরোগের চরিত্র জানতে ছুটতে হত কলকাতায়। এখন সে সুযোগের মুখ দেখতে চলেছে মুর্শিদাবাদও। ‘রাজরোগ’-এর চরিত্র জানতে সময় লাগবে সাকুল্যে ঘণ্টা দুয়েক। পদ্ধতিটা নতুন, ‘সিবিনাট’। অর্থাৎ কার্টিজ বেসড্ নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যাপ্লিফিকেশন টেস্ট।
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী বলেন, “আগে প্রতি মিলিলিটারে ১০ হাজার ব্যাকটেরিয়া থাকলে তবেই পরীক্ষায় বোঝা যেত রোগী যক্ষ্মা আক্রান্ত কিনা। সিবিনাট যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করে প্রতি মিলিলিটারে ৫০-১৫০টি ব্যাকটেরিয়া থাকলেই যক্ষ্মার চরিত্র ধরা পড়বে। রোগটা কতটা মারাত্মক, কোন অবস্থায় রয়েছে, সবই বোঝা যাবে।”
কিন্তু ‘যাবে’ কেন, যখন সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে জেলার শতকরা ২৯ শতাংশ মানুষই যক্ষ্মার শিকার? পিছিয়ে পড়া জেলা মুর্শিদাবাদ কেন এ ব্যাপারে পিছিয়ে থাকবে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে নেই। প্রতিশ্রুতি রয়েছে, অচিরেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে সিবিনাট যন্ত্র বসতে চলেছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রতি বছর সাত হাজারেরও বেশি মানুষের যক্ষ্মা ধরা পড়ে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে সিবিনাট পদ্ধতিতে যক্ষ্মা পরীক্ষা চালু হলেও মুর্শিদাবাদের কথা স্বাস্থ্য দফতরের মনে আসেনি।
জেলার যক্ষ্মা আধিকারিক পার্থপ্রতিম গুপ্ত বলেন, “মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, ফরাক্কা, সুতি-২, সাগরদিঘি, ভগবানগোলা-২, বেলডাঙা-১, ভরতপুর-২, মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ও নবগ্রাম ব্লক যক্ষা প্রবণ এলাকা। এ ছাড়াও বহরমপুর পুরসভার ভাগীরথীর পাড় লাগোয়া কলোনি এলাকা ও কুঞ্জঘাটার বস্তিবাসীদের মধ্যে যক্ষারোগের প্রকোপ দেখা যায়।”
পার্থপ্রতিমবাবু জানান, পরীক্ষা করে দেখা গেল কোনও মানুষ যক্ষা রোগে আক্রান্ত, তখন প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। এর পরে দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে তিন-চার বার কফ পরীক্ষা করে দেখা হয় তাঁর শরীরে যক্ষা রোগের ব্যাকটেরিয়া আছে কিনা। যদি দেখা যায় তাঁর শরীরে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, তখন ওই রোগীকে কলকাতার বেলেঘাটা আইআরএল-এ লাইন প্রোব এ্যাফে বা এলপিএ করতে পাঠানো হত। ওই রিপোর্ট আসতে সময় লেগে যেত। ফলে চিকিৎসা শুরু হতেও দেরি হত। এখন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ওই পরীক্ষা হবে এবং তা হবে বিনামূল্যে।
কেন্দ্রীয় সরকার বছর দুয়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগণার আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে ওই পরীক্ষা চালু করে। ওই প্রকল্প সফল হওয়ায় সম্প্রতি ভারতের ৪২টি জেলায় ‘রিভাইস ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। প্রকল্প চালুর জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি রাজ্যের তিনটি জেলা- কলকাতার ট্যাংরা, হাওড়া জেলা হাসপাতালেও সিবিনাট বসছে ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.