দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। শয্যা কম, নেই দাঁত-চোখ-চর্মরোগের ডাক্তার, বহু চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদও ফাঁকা রয়েছে বলে অভিযোগ ওটার মধ্যেই আসানসোল জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দিল স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতাল ক্যাম্পাসেই এগারো তলার একটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হতে চলেছে।
হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, এই নতুন ভবন মর্গের পাশে করার প্রস্তাব দিয়েছিল রোগী কল্যাণ সমিতি। কিন্তু কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক আপত্তি জানান, ভবিষ্যতে মর্গ আরও বড় হতে পারে। তা ছাড়া হাসপাতালের মূল ভবন থেকে সেটি বেশ দূরে। এর পরে রোগী কল্যাণ সমিতি ১৭ অগস্ট হাসপতালের মূল ভবনের কাছে নার্সিং হস্টেলের সামনে ফাঁকা জায়গাটি বেছে নেয়। পূর্ত দফতরে পাঁচ বাস্তুকার জায়গাটি পরিদর্শনও করেন। জানা যায়, সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, নার্সিং সুপার, রেকর্ড রুম, অনুসন্ধান কেন্দ্র, প্রশাসনিক দফতর-সব ওই ভবনে স্থানান্তর হবে। সুপার আরও জানান, বর্তমানে জরুরি বিভাগে জায়গা কম। মূল ভবনের পুরনো ক্যান্টিনের জায়গা মিলিয়ে দিয়ে ওই বিভাগটি বড় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। রেকর্ড রুম বলে কিছু নেই। জিনিসপত্র ছোট ছোট ঘরে রাখা থাকে। প্রতি মাসের বা বছরের ফাইল রাখারও জায়গা নেই। নতুন ভবনে এ সব বিভাগ চালু হবে।
১৯৭৬ সালের ২৯ মার্চ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় আসানসোল হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বারোদঘাটন করেন। এক বছর আগে তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জেলা হাসপাতালের মর্যাদা দেন। কিন্তু তার পরেও পরিকাঠামোর বিশেষ উন্নয়ন হয়নি। হাসপাতালের কর্মী সংগঠনের আহ্বায়ক সুকান্ত দাশগুপ্তের অভিযোগ, ৪৫০টি শয্যার অনুমোদন থাকলেও রয়েছে ৩৫০টি। মহিলা বিভাগে এক শয্যায় দু’জন রোগীকে থাকতে হচ্ছে। অনুসন্ধান কেন্দ্রে বসার লোক নেই। চুক্তির ভিত্তিতে দু’জন টিকিট কাউন্টারে কাজ করেন। চতুর্থ শ্রেণির ৪২টি পদ শূন্য। ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান থেকে ফার্মাসিস্ট পদ, কোথাও পর্যাপ্ত কর্মী নেই বলে দাবি তাঁর।
সঙ্কট রয়েছে চিকিৎসকেরও। এক বছর ধরে চর্মরোগ, দাঁত ও চোখের ডাক্তার নেই। শল্য চিকিৎসকের দু’টি ও সাধারণ চিকিৎসকের আটটি পদ ফাঁকা। সুকান্তবাবু জানান, ২৯ অগস্ট সিএমওএইচ-কে দাবিপত্র দিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর অনেক আগে ভেঙে গিয়েছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাস হয়ে দক্ষিণ দিক মহিশীলা যাওয়ার ‘শর্ট রুটে’ পরিণত হয়েছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে পুলিশ ক্যাম্প চালুরও আবেদন জানান তাঁরা।
|
• নতুন ভবনের জন্য চিহ্নিত হয়েছে নার্সিং হস্টেলের সামনের জায়গা।
• সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, নার্সিং সুপার, রেকর্ড রুম, অনুসন্ধান কেন্দ্র, প্রশাসনিক দফতর-সব ওই ভবনে স্থানান্তর হবে।
• নতুন ভবনে চালু হবে রেকর্ড রুম। |
|