সমন্বয়ের অভাব, বেহাল বিটি রোড
ড়িঘড়ি অনন্যা মোড় পার হতে গিয়ে পিছলে পড়ে গেলেন শুভ দাস। অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন তিনি। কিছু দিন আগে ফুটপাথের ধারে রাস্তা খুঁড়ে কাজ হয়েছিল। কোনওমতে মাটি, ইট চাপা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আগের রাতের অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তা কাদায় ভরে গিয়েছে। সামলে নিয়ে এলাকার বাসিন্দা শুভবাবু বলেন, “কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পিচ কবে হবে কেউ জানে না। ভোগান্তি শুধু আমাদের।”
ব্যারাকপুর থেকে বাসে বসে যেতে যেতে ঘুম এসে গিয়েছিল শ্যামল রায়ের। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় পার করে কিছুটা এগোতেই আচমকা সামনের সিটের দিকে ছিটকে পড়ে মুখে আঘাত পেলেন। বাসের চাকা গর্তে পড়ে এই অবস্থা। তাঁর কথায়: “এই রাস্তায় এমন গর্ত ভাবা যায় না। দ্রুত মেরামত করা দরকার।”
শুধু এই দু’টি ঘটনাই নয়, বিটি রোডে যাত্রীদের এমন ভোগান্তি চলছেই। শ্যামবাজার থেকে টালা ব্রিজ, পাইকপাড়া মোড়, চিড়িয়া মোড়, সিঁথি থেকে ডানলপ, বেলঘরিয়া, কামারহাটি, পানিহাটির মোড়-সহ একাধিক জায়গায় বিটি রোডের অবস্থা খারাপ। গাড়িচালক এবং নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাস্তার এই অবস্থার জন্য চলাচল রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ দিন এই রাস্তার মেরামত হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করেন খড়দহের অসীম গুহ। তিনি বলেন, “কোথাও রাস্তার মাঝে গর্ত। কোথাও আবার রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। দু’ধারে দখলদারিও রয়েছে। গাড়ি চালাতে সমস্যা হচ্ছে।” গাড়িচালক ভোলা রং-এর অভিজ্ঞতা, “রাস্তা সারানোর পরেও সমস্যা থেকে যায়। আগের বার সারানোর পরে রাস্তা উঁচু-নিচু হয়ে গিয়েছে। রাতে দূর থেকে বোঝা যায় না।”
কেন এই অবস্থা?
বাসিন্দারা জানান, নানা কাজে নানা দফতর মাঝেমধ্যেই রাস্তা খোঁড়াখুড়ি করে। ফলে রাস্তা দীর্ঘ দিন ঠিক থাকে না। বিটি রোডের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। কিন্তু পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, রাস্তা মেরামতের পরে কোনও না কোনও কাজের জন্য আবার রাস্তা খোঁড়া হয়। যেমন, টবিন রোডে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট বসানোর কিছু দিনের মধ্যেই অন্য একটি সরকারি দফতর তাদের কাজের জন্য রাস্তা খুঁড়েছিল। বরাহনগর পুরসভার কাউন্সিলর তৃণমূলের অঞ্জন পাল বলেন, “বিটি রোড শুধু যান চলাচলই নয়, একাধিক পরিষেবার জন্য ব্যবহৃত হয়। ফলে কোনও না কোনও দফতর কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়ে।”
রাস্তা সারাতেও সমস্যা হয়েছে। বিটি রোডের মেরামতির কাজ দিনে করা যায় না। রাতে শ্রমিক পেতে সমস্যা হয়। মজুরি সংক্রান্ত নানা সমস্যা হয়। এমনই অভিযোগ ঠিকাদারদের একাংশের। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত অংশের তালিকা তৈরি করে দরপত্র ডাকা হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় রাস্তা সারানোর সামগ্রী ফেলাও হয়েছে। শ্রমিক সমস্যার জেরে কাজ শুরু হতে কিছু দেরি হচ্ছে। দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।” পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “বিটি রোডের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি দফতরের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে এই সমস্যা থেকেই যাবে।”

ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.