বাড়িতে ঢুকে ভোজালি মেরে লুঠ বারাসতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
থানা চার ভাগে ভাগ হয়েছে। তবুও অপরাধ কমছে না বারাসত থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাতে বারাসত থানার রামকৃষ্ণপুরে পাশাপাশি দু’টি বাড়িতে হানা দিয়ে লক্ষাধিক টাকা-গয়না লুঠ করে পালাল ডাকাতেরা। তাদের ভোজালির ঘায়ে জখম হয়েছেন দুই বৃদ্ধা ও এক ব্যক্তি।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে নাগাদ রেলকর্মী রামনন্দনবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় দুই সশস্ত্র ডাকাত। আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা রামনন্দনবাবু বাড়িভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন। ডাকাতেরা সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠে তালা ভেঙে তাঁর ঘরে ঢোকে। রামনন্দনবাবু জেগে গিয়ে বাধা দিতে গেলে এক ডাকাত তাঁর পেটে ভোজালি ঢুকিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকেন তিনি। লুঠপাট করে ডাকাতেরা হানা দেয় পাশের বাড়িতে। সেখানে থাকেন রামনন্দনবাবুর বাড়িওয়ালি দুই বৃদ্ধা। সম্পর্কে বৌদি ও ননদ ওই দু’জনেরই নাম মায়া ভদ্র।
পুলিশ জানায়, ডাকাতেরা গ্রিলের তালা ভেঙে ঢোকে। দুই বৃদ্ধা জেগে যেতেই ডাকাতেরা এক জনের মাথা গ্রিলে ঠুকে দেয়। মাথা ফেটে যায় তাঁর। অন্য জনের পিঠে ডাকাতেরা ভোজালির কোপ বসায়। শুক্রবার এক বৃদ্ধা বলেন, “আমরা মেঝেয় পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম। ওরা শাসায়, চিৎকার করলেই খুন করবে।” বৃদ্ধারা জানান, একটি আলমারির চাবি হাতিয়ে নেয় ডাকাতেরা। অন্য আলমারিটির চাবি না পেয়ে সেটিকে আছড়ে ভাঙে। ওই পরিবারের অভিযোগ, ওই দুই বৃদ্ধাকে বেঁধে নগদ ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, প্রায় ১২০ গ্রাম সোনার গয়না, মোবাইল, ঘড়ি নিয়ে চম্পট দেয় ডাকাতেরা। প্রতিবেশীরাই রামনন্দনবাবু ও মায়াদেবীদের উদ্ধার করেন। আহতদের বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুরুতর জখম রামনন্দনবাবুকে পরে বি আর সিংহ রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার বৃদ্ধার মেয়ে চন্দ্রাণী দাস বলেন, “একের পর এক অঘটন ঘটছে বারাসতে। নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। আমাদের ছোটবেলায় এমন কখনও দেখিনি। মা-পিসিকে বলছি, আমার কাছে চল। কিন্তু পৈতৃক বাড়ির টান ছেড়ে ওরা যেতে চাইছে না।”
উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, “তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীরা এখনও ধরা পড়েনি।” |