সোনারপুর স্টেশন উত্তাল বিক্ষোভে, ভুল মানল রেল
বিক্ষোভ-ডেপুটেশন চলছিল অনেক দিন ধরেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে রেল-কর্তৃপক্ষ গা না করায় শুক্রবার সোনারপুর স্টেশনের ওই বিক্ষোভই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। এ দিন সকালে প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েকশো নিত্যযাত্রী। পুলিশ অবরোধ তুলতে এলে তাদের লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালালে উত্তেজিত জনতা ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী এসে অবস্থা সামাল দিল যখন, তখন অফিসটাইম পেরিয়ে গিয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ট্রেন দেরিতে চলা এবং অতিরিক্ত ভিড় নিয়ে। যে ট্রেনটি ঘিরে গোলমাল, সেটি সকাল ৮টা ৩৮ মিনিটের শিয়ালদহগামী সোনারপুর লোকাল। এই ঘটনার জেরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় সাড়ে চার ঘণ্টা ট্রেন বন্ধ থাকে। মোট ২১ জোড়া ট্রেন বাতিল করা হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
রেললাইনে নেমে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ নিত্যযাত্রীদের।
শুক্রবার, সোনারপুর স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র
এ দিন ঠিক কী ঘটেছিল? নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ক্যানিং থেকে একটি লোকাল আসে সোনারপুরে। ঠিক তার আগে একটি সোনারপুর লোকাল ছাড়া হয় শিয়ালদহ পর্যন্ত। কিন্তু কোনও দিনই শিয়ালদহগামী সোনারপুর লোকালটি সময় মতো ছাড়ে না। ক্যানিং-সোনারপুর লোকালটি সোনারপুরে রোজই দেরি করে ঢোকে। তার পরেই শিয়ালদহগামী আপ ট্রেনটি সোনারপুর থেকে ছাড়া হয়। আবার, অনেক সময়ে ক্যানিং-সোনারপুর লোকালটি সোনারপুরে আসার পরে সেটিকেই নাম পাল্টে শিয়ালদহ পর্যন্ত সোনারপুর লোকাল বলে চালানো হয়। ফলে ক্যানিং লোকালের সব যাত্রী সোনারপুর স্টেশন থেকে সোনারপুর লোকালে উঠে পড়েন। আর ট্রেনে অসম্ভব ভিড় হয়ে যায়। অধিকাংশ দিনই সোনারপুরের যাত্রীরা উঠতে পারেন না। গোলমাল এটা নিয়েই।
এ দিন সকালেও ট্রেনটি দেরিতে ছাড়ায় সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শুরু হয় বিক্ষোভ-অবরোধ। তখনই সোনারপুরে ঢোকে ক্যানিং-সোনারপুর লোকাল। যাত্রীরা দলে ভারী হয়ে যাওয়ায় আপ ও ডাউন লাইনে নেমে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। রেললাইনের স্লিপার তুলে দেওয়া হয়। কিছু যাত্রী ট্রেনের সামনেও বসে পড়েন। জিআরপি ও আরপিএফের আধিকারিকেরা নিত্যযাত্রীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। কিন্তু অবরোধ তো ওঠেইনি, উল্টে তাঁদের লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন কয়েক জন বিক্ষোভকারী।
এর পরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠি চালাতে শুরু করে জিআরপি ও আরপিএফ। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুলিশের লাঠির আঘাতে এক মহিলা-সহ চার জন নিত্যযাত্রী জখম হন। তার পরেই কয়েক জন পুলিশকর্মীকে তাড়া করেন বিক্ষোভকারীরা। গৌরমোহন পাইক নামে এক পুলিশকর্মীকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের মারে দু’জন জিআরপি পুলিশকর্মীও গুরুতর জখম হন। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে না আসায় বেলা ১১টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনা পুলিশের বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশকর্তারা। তার পরে বেলা ১২টা ২০ নাগাদ অবরোধ ওঠে।
রেল কর্তৃপক্ষ কী বলছেন? যাত্রীদের অভিযোগ একদম উড়িয়ে দিতে পারেননি শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সুচিত্ত দাস। তিনি বলেন, “যাত্রীদের বক্তব্য আমরা বুঝতে পেরেছি। কিন্তু ওই সময়ে সোনারপুর থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত চারটি লাইনেই বহু ট্রেন থাকে। ফলে আলাদা করে নতুন ট্রেন দেওয়া খুব কঠিন। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি সময় পরিবর্তন করে যদি এই পরিস্থিতি কিছুটা মোকাবিলা করা যায়।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.