তৃণমূল নেতাকে মারধরে বনগাঁয় তাণ্ডব
তৃণমূলের এক নেতার উপরে হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে দফায় দফায় অশান্তি ছড়াল বনগাঁয়। শুক্রবার সকালে থানার সামনেই দু’টি হোটেল-দোকানে ভাঙচুর চালায় এক দল লোক। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। সব মিলিয়ে জখম হয়েছেন জনা পাঁচেক। গ্রেফতার করা হয়েছে ১ জনকে। গোটা ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও তা মানেননি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল পর্যবেক্ষক ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে তিনি বলেন, “মনোরঞ্জন বাবুকে মারধরের ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার শুরু বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। বনগাঁ শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন বিশ্বাসের পথ আটকায় কিছু যুবক। ত্রিকোণ পার্কের কাছে তাঁকে ঘিরে ধরে মারধর করা হয়। তৃণমূল না ছাড়লে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। মনোরঞ্জনবাবুকে রাতেই ভর্তি করা হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। মলয় বসু ওরফে কেপো ও তাঁর দলবলের নামে থানায় নালিশ জানান মনোরঞ্জনবাবু। কেপো আবার শহরেরই কিছু তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে কেপোর দাবি, মনোরঞ্জনবাবুকে কটূক্তি করছিল এক যুবক। তিনি প্রতিবাদ করেন।”
দোকানে তাণ্ডবের চিহ্ন। ভেঙে পড়ে আছে জিনিসপত্র।—নিজস্ব চিত্র।
ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। শুক্রবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়ায় শহরে। বেলা ১০টা নাগাদ বনগাঁ থানার সামনেই বেশ কিছু দোকান-হোটেলে হামলা চালায় কিছু লোক। দু’টি দোকান-হোটেলে ভাঙচুর চলে। মারধর করা হয় এক মহিলা-সহ তিন জনকে। এঁরা সকলেই কেপোর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। হামলার ঘটনায় অভিযুক্তেরা আবার মনোরঞ্জনবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
পুলিশের সামনেই হামলা-ভাঙচুর হলেও প্রথমে দিকে তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। লাঠির ঘায়ে জখম হন এক জন। চিকিৎসাধীন তিন জন। মনোরঞ্জনবাবুর উপরে হামলায় অভিযুক্ত এক জনকে জনতাই ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক এক জন। কেপোর লোকজন আবার থানার সামনে একটি পুজোর গেট তৈরির কাজ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। ফলে সংশ্লিষ্ট ক্লাবের ছেলেরাই কেপোর বাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ। বনগাঁর এসডিপিও রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, “একাধিক অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে।” একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিকে, থানার সামনে গোলমাল চলাকালীনই ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কেপোর বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, মনোরঞ্জনের ঘনিষ্ঠদের একটি অংশই ওই ঘটনায় জড়িত। কেপোকে না পেয়ে মারধর করা হয় তাঁর বাবা-মাকে। ভাঙচুর চলে বাড়িতে। দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে বেলার দিকে থানায় আসেন বনগাঁর তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। মনোরঞ্জনবাবু তাঁর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ওই সময়ে থানা চত্বরে আসেন পুর চেয়ারম্যান তৃণমূলের জ্যোৎস্না আঢ্য ও তাঁর স্বামী শঙ্কর। তাঁদের পিছন পিছন তৃণমূলের কিছু লোকজন ঢুকে পড়ে থানায়। শঙ্করবাবুর সঙ্গে বিশ্বজিৎবাবুর বনিবনা নেই বলেই দলীয় সূত্রের খবর। অভিযোগ, থানা চত্বরেই বিশ্বজিৎবাবুকে কটূক্তি করে শঙ্করবাবুর অনুগামীরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।
বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “আমরা চাই, মনোরঞ্জনকে যারা মারধর করেছে পুলিশ তাদের ধরুক।” তবে কেপো তৃণমূলের কেউ নয় বলেই তাঁর দাবি। বিধায়ক জানান, কয়েক মাস আগে মনোরঞ্জনবাবু পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি হয়েছেন। তা মেনে নিতে পারেননি দলের কেউ কেউ। তারই জেরে তাঁর উপরে হামলা হয়ে থাকতে পারে। কেপোর বিরুদ্ধে অসামাজাকি কাজকর্মে যুক্ত থাকার নানা অভিযোগ তাঁর কানে এসেছে বলে দাবি বিশ্বজিৎবাবুর। যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, কেপোর নামে থানায় অতীতে কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.