|
|
|
|
চলছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ |
আমন চাষে ক্ষতি দুই জেলাতেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল ও তমলুক |
হিসাবটা চলছিল। এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে, প্রাথমিক হিসাবেই যে ছবিটা উঠে আসছে, যথেষ্ট চিন্তার। দেখা যাচ্ছে, সম্প্রতি পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের যে এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল, সেখানে আউশ ও আমন ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বোরো চাষের সময় কৃষকদের বীজ ধান, মিনিকিট সরবরাহ করার কথা ভাবছে কৃষি দফতর।
পালা করে নিম্নচাপ আর মরসুমের বৃষ্টির মাঝেই ব্যারাজের ছাড়া জল উপচে কিছু দিন আগে জলমগ্ন হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। এ দিকে, পূর্ব মেদিনীপুরে পাঁশকুড়ায় কাঁসাইয়ের বাঁধ ভেঙে তমলুক, পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ও নন্দকুমার ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে যায়। এখন জল কিছুটা সরলেও চাষে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে আমন চাষে। ক্ষতি হয়েছে আউশ ও কলাই চাষেও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা প্রণবেশ বেরা বলেন, “বন্যা ও অতিবর্ষণে প্রায় ৬১ হাজার হেক্টর জমির আমন, আউশ ও কলাই চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও আমন চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
অথচ, এই চাষের উপরই নির্ভরশীল জেলার প্রায় আশি শতাংশ মানুষ। এই জেলায় ফি বছর ৫ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন চাষ হয়। ১৫ অগস্টের মধ্যে আমন ধান রোয়ার শেষ সময়। যাঁরা আউশ ধান কেটে আবার সেই জমিতেই আমনের চাষ করেন (খড়্গপুর মহকুমায় বেশি হয়), তাঁদের ক্ষেত্রে একটু দেরি হয়। টানা বৃষ্টিতে জমি দীর্ঘ দিন ধরে জলের তলায় থাকায়, এঁরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘাটালের দেওয়ানচক ১ পঞ্চায়েতের অরুণ ঘোষ বলেন, “তিন বার চারা রুয়েছি। প্রতি বারই জমিতে জল জমে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সময়ও শেষ। বীজতলাও আর নেই। এখন নতুন বীজতলার খোঁজ করছি।”
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোপীবল্লভপুর-১ ও ২, নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল, ডেবরা, কেশিয়াড়ি, ঘাটাল, দাসপুর-সহ মোট ১৩টি ব্লকে আমনের ক্ষতি হয়েছে। জেলার সহ কৃষি-আধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস আধিকারী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে জেলায় আউশ-সহ আমনের ক্ষয়ক্ষতির একটা হিসাব পেয়েছি। তাতে মোট ৪৫ হাজার ২২১ হেক্টর আমন খেতে জল জমার খবর এসেছে বৃষ্টি-বন্যায়। এর মধ্যে ৩০ হাজার ৫২৭ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সরকারি নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে জোরদকমে।” জেলার কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস আধিকারী জানান, ১৩টি ব্লকে মোট ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যা ১ লক্ষ ৬ হাজার।
শুধু ধানই নয়, দুই জেলাতে ফুল ও সব্জি চাষেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের দু’টি ব্লকে ফুল চাষে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক রণজয় দত্ত বলেন, “জেলার ন’টি ব্লকে ১৩৫৫ হেক্টর জমির সব্জি এবং ৩০০ হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে ফুল চাষে জল জমেছে।” তবে এটা সরকারি তথ্য। বেসরকারি মতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।
|
পুরনো খবর: প্রবল বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, চাষেও ক্ষতি |
|
|
|
|
|