|
|
|
|
প্রবল বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, চাষেও ক্ষতি
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
নিম্নচাপের জেরে রবিবার বিকেল থেকে প্রবল বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। জেলা কৃষি দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর থেকেই জেলার কিছু এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। এ দিন রাতভর বৃষ্টির পর সোমবারও তা অব্যাহত থাকে। ফলে তমলুক, হলদিয়া, ভগবানপুর, পটাশপুর এলাকার বহু চাষের জমিতে জল জমে গিয়েছে। ফলে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বহু কাঁচা বাড়িরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
জেলা কৃষি দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড়ে ৬৯.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তমলুক ও হলদিয়া মহকুমায় ১৫৫ মিলিমিটার ও এগরা মহকুমায় ১৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তুলনায় কাঁথি মহকুমার উপকূলবর্তী অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ কম। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, তমলুক মহকুমার ময়না, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক, হলদিয়া মহকুমার পটাশপুর ১ ও ২, ভগবানপুর ১ ব্লক ও কাঁথি মহকুমার খেজুরি ১ ও ২, ভগবানপুর ২ ব্লকে আমন, সব্জি, পান ও ফুল চাষের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কোলাঘাটের সিদ্ধা এলাকার উত্তর জিয়াদা গ্রামর চাষি গোপাল সামন্ত, বৃন্দাবনচক এলাকার চাপদা গ্রামের চাষি রথীন্দ্র মাইতি বলেন, “প্রবল বৃষ্টির দরুণ মাঠে জমে যাওয়া জলে ধানের চারা ডুবে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি জল বের করা না গেলে ধানের চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা প্রণবেশ বেরা বলেন, “বৃষ্টির কারণে মাঠ জলে ডুবে থাকায় জেলার প্রায় ১৩টি ব্লকের আমন ধানের চারার ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ জানতে চেষ্টা চলছে।” বৃষ্টির জন্য এ দিন স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হারও ছিল কম। পাঁশকুড়া ব্রাডলি বার্ট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বনমালী সামন্ত জানান, বৃষ্টির কারণে অন্যান্য দিনের চেয়ে স্কুলে উপস্থিতির হার কম ছিল। তাই টিফিনেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। নন্দীগ্রামের রাজারামচক হাইস্কুলের এক শিক্ষক জানান, সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টির কারণে স্কুলে উপস্থিতির হার কম ছিল। বৃষ্টির দাপটে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় নিত্য যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। রাস্তায় লোকজন কম থাকার আশঙ্কায় জেলার বিভিন্ন সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন বহু বাস মালিক। জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, “জেলার সব সড়ক মিলিয়ে প্রায় বারোশো’র মতো যাত্রীবাহী বাস চলে। কিন্তু এ দিন বৃষ্টির কারণে মোট বাসের অর্ধেকও পথে নামেনি। আর যেসব বাস চলেছে তারাও যাত্রীর অভাবের কারণে অনেক সময়ের ব্যবধানে বাস চালিয়েছে।” প্রবল বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন বন্যাপ্রবণ এলাকার বাসিন্দারাও আতঙ্কিত। কোলাঘাটের সিদ্ধা, বৃন্দাবনচক, সাগরবাড়, পাঁশকুড়ার মাইশোরা, কেশাপাট, চণ্ডীপুরের কসবা, কুলুক, রামপুর ও ময়নার বেশ কিছু এলাকায় অনেক গ্রামের রাস্তাও জলে ডুবে থাকায় সমস্যায় পড়েন গ্রামবাসীরা। এলাকার বাসিন্দা শান্তনু বেরা বলেন, “চণ্ডীপুর বাজারে যাওয়ার মোরাম রাস্তা জলে ডুবে থাকায় সমস্যা হচ্ছে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সাগর সিংহ বলেন, “প্রবল বৃষ্টির জেরে জেলার কিছু এলাকা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গিয়েছে। এলাকার বিডিওদের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|