ভাঙাচোরা জিটি রোডে যাতায়াতে প্রাণান্ত যাত্রীদের
জিটি রোড ভেঙে ছত্রখান। পুজোর মুখে হুগলি জেলার অন্যতম প্রধান এই সড়কের বেহাল অবস্থায় নাভিঃশ্বাস সাধারণ মানুষের। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর সূত্রে যা জানা যাচ্ছে তাতে, আপাতত খানাখন্দে জোড়াতাপ্পি দিয়েই মানুষের ক্ষোভে প্রলেপ দেওয়া চেষ্টা করা হবে। পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কাজ শুরু হতে পুজো পেরিয়ে যাবে।
জিটি রোড ধরে বিভিন্ন রুটের বেসরকারি বাস চলাচল করে। ৩ নম্বর রুটের বাস শ্রীরামপুর থেকে কলকাতায় যায়। রাস্তার বেহাল দশায় বাসচালক থেকে নিত্যযাত্রী প্রত্যেকেই তিতিবিরক্ত। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, ভাঙা রাস্তায় গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। কিছু জায়গায় আলোর অভাবে সন্ধ্যার পর থেকে গাড়ি চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। খারাপ রাস্তার কারণে তীব্র যানজটও তৈরি হচ্ছে।
পিচ উঠে বেশির ভাগ অংশে এই দশা হয়েছে রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।
হুগলিতে জিটি রোডের বিস্তার উত্তরপাড়া থেকে মগরা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার। দীর্ঘ এই পথের বেশির ভাগ জায়গাই বেহাল। উত্তরপাড়ার কোতরং থেকে সখের বাজার, দোলতলা, রিষড়ার বাগখাল, শ্রীরামপুরের মাহেশ থেকে মানিকতলা, কালীতলা-সহ নানা জায়গায় ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ। শ্রীরামপুর ছাড়িয়ে নওগা থেকে শেওড়াফুলি ঘোষ মার্কেট, ব্যান্ডেল থেকে সপ্তগ্রাম নন্দীপুকুর মোড় অথবা মগরা গঞ্জ মোড় থেকে খন্যান সর্বত্রই গর্তে পরিপূর্ণ বাদশাহী আমলের এই সড়কপথ।
শ্রীরামপুরের কমল দেব অ্যাম্বুল্যান্স চালান। তাঁর কথায়, “জিটি রোডের যা হাল, তাতে গাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রোগীর পক্ষেও এই রাস্তা কম বিপজ্জনক নয়। তা ছাড়া. খানাখন্দ কাটিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে বা যানজটে পড়ে কলকাতার হাসপাতালে পৌঁছতে অতিরিক্ত এক-দেড়ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।” মাঝেমধ্যে জিটি রোড এড়াতে ঘুরপথে দিল্লি রোড ধরেও কলকাতায় যাতায়াত করছেন অনেকে। রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে সোমবার সখের বাজারে জিটি রোড অবরোধ করে বিজেপি। দিন কয়েক ধরে কয়েকটি জায়গায় অবশ্য জোড়াতাপ্পি দেওয়া হচ্ছে। তবে তাতে পরিস্থিতির বিশেষ বদল হবে না, বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগেই জিটি রোড সারানো হয়েছিল। কিন্তু বর্ষার আগেই তা ফের বেহাল হয়ে পড়ে। মানুষের অভিযোগ, আদপেই ঠিকঠাক ভাবে সারানো হয় না ওই রাস্তা। কখনও স্রেফ জোড়াতাপ্পি দেওয়া হয়। আবার কখনও পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের নামে প্রয়োজনের নিতান্তই কম কাঁচামাল দিয়ে কাজ সারা হয়।
বর্ষায় বেহাল পরিস্থিতি হয়েছে রাস্তাঘাটের। পুজো না মিটলে রাস্তা পাকাপাকি
সংস্কার হওয়ার আশা নেই। আরামবাগ-বিষ্ণুপুর রাস্তায়
গোঘাটের কুলকিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
অভিযোগ, চাঁপদানিতে জিটি রোডের ধারে দফতরের জমিতে বেআইনি নির্মাণ হলেও পূর্ত দফতর উদাসীন। বহু জায়গায় জিটি রোডের ধারে ইচ্ছেমতো দোকান-বাড়ি গজিয়ে উঠেছে। অনেকে নিজেদের নির্মাণের সামনের জায়গা মাটি ফেলে উঁচু করে নিয়েছেন। ফলে, জিটি রোড সেই তুলনায় নিচু হয়েছে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে থাকছে। রাস্তার অবস্থা আরও শোচনীয় হচ্ছে। রাস্তা সারাইয়ের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতর। তারা অভিযোগ মানেনি। দফতরের বক্তব্য, নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই কাজ হয়। তবে রাস্তার দুর্দশা মেনে নিয়ে দফতরের হুগলির নির্বাহী বাস্তুকার পার্থপ্রতিম সিংহ বলেন, “খানাখন্দ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পুজোর আগে জিটি রোড চলনসই হবে।” নির্বাহী বাস্তুকারের আশ্বাস, “পুজোর পরে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.