ফের এক তরুণীর উপরে প্রকাশ্যে হামলার অভিযোগ শহরের বুকে। অভিযোগ, দ্বিতীয় বর্ষের এক কলেজছাত্রীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে মোটরবাইক-আরোহী দুষ্কৃতীরা। ওই তরুণী বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধারালো অস্ত্রে গুরুতর জখম করে চম্পট দেয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পাটুলি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। শুক্রবার পাটুলি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ছাত্রী।
শহরের বিভিন্ন থানা এলাকায় সকালে বা সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরোনো মহিলাদের কাছ থেকে সোনার গয়না ছিনতাইয়ের ঘটনা নতুন নয়। মহিলাদের শ্লীলতাহানি বা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগও জমা পড়ছে বিভিন্ন থানায়। তবে পাটুলিতে ভরদুপুরে যে ভাবে ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, তাতে এলাকার বাসিন্দারা তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। যদিও লালবাজারের পুলিশকর্তারা পাটুলির ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেছেন। তবে তাঁদের আশ্বাস, এই ঘটনায় অভিযুক্তেরা ধরা পড়বে।
কী হয়েছিল বৃহস্পতিবার দুপুরে?
যাদবপুরের শান্তিপল্লির বাসিন্দা ওই ছাত্রী গড়িয়া কে কে দাস কলেজে পড়েন। ওই ছাত্রী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ কলেজের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। কেন্দুয়া রোডের ফুটপাথ দিয়ে কিছুটা হেঁটে অটোয় ওঠার কথা ছিল তাঁর। হাঁটার সময়ে আচমকা একই মোটরবাইকের আরোহী দুই যুবক তাঁর কাঁধের ব্যাগের হাতল ধরে টান মারে। ছাত্রীর অভিযোগ, “প্রথমে হতচকিত হয়ে পড়ি। তার পরেই বুঝতে পারি, ওরা আমার ব্যাগ ছিনতাই করতে চায়। চেঁচিয়ে প্রতিবাদ করতেই ওদের এক জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার ডান কনুইয়ে আঘাত করে। রক্তে ভেসে যেতে থাকে হাত।”
পুলিশ জানায়, ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে না পেরে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে ওই ছাত্রী নিজেই স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে যান। ছাত্রীর অভিযোগ, নার্সিংহোম-কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানান, আগে পুলিশের কাছে তাঁকে অভিযোগ জানাতে হবে। তার পরে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হবে। ওই নার্সিংহোমে ইমার্জেন্সিও ছিল না। নার্সিংহোম-কর্তৃপক্ষের উপরে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি অটোরিকশায় উঠে যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান এবং সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফেরেন। পরে তাঁরা পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সার্ভে পার্ক থানা এলাকায় সন্তোষপুর অ্যাভিনিউয়েও বুধবার সন্ধ্যায় বয়স্ক এক মহিলার হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে মোটরবাইক-আরোহী দু’জন দুষ্কৃতী। মহিলা বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, এই ঘটনাটি আগে ঘটলেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে বুধবার।
ডিসি (এসএসডি) সন্তোষ পান্ডে জানান, দু’টি ঘটনারই তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, পাটুলির ঘটনায় কোনও প্রত্যক্ষদর্শীকে পাওয়া যায়নি। ওই ছাত্রীও জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে আর কেউ ছিল না। |