হলদিয়া পেট্রোকেম
শেয়ার নিলামের আগে
ঋণ দিতে নারাজ ব্যাঙ্ক
শাঁখের করাত।
ফের সেই পুজোর মুখেই নতুন সঙ্কটে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস। আর্থিক অনটনে জর্জরিত সংস্থাটিকে নতুন করে ধার দিতে বেঁকে বসেছে ব্যাঙ্কগুলি। সংস্থার শেয়ার নিলামের ফলাফল কী হয়, তা না-দেখে আর এক প্রস্ত ঋণের দায় নিতে নারাজ তারা। ধারের অঙ্ক বাড়াতে রাজি নয় মালিকানা-সমস্যার সমাধান হওয়ার আগে। আবার নিলাম ক্রমশ পিছিয়ে যাওয়ায় পুঁজি আসছে না ‘নতুন’ অংশীদারের কাছ থেকেও। ফলে এই শাঁখের করাতেই সঙ্কট আরও গভীর হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে ধুঁকতে থাকা পেট্রোকেম সংস্থাটির।
প্রথমে জুন মাস। পরে মালিকানা ছেড়ে বেরিয়ে আসার জন্য সেপ্টেম্বরের সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল রাজ্য। কিন্তু এখন সেই সময়ের মধ্যেও নিলাম শেষ হবে কি-না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। সেই কারণেই ক্ষীণ আর এক প্রস্ত ব্যাঙ্কঋণের সম্ভাবনা। তবে রাজ্যের অবশ্য দাবি, আর না-পিছিয়ে নিলাম শেষ করা হবে চলতি মাসের মধ্যেই।
অথচ বাড়তে থাকা লোকসানের বোঝা এবং কাঁচামালের দাম মেটাতে না-পারার কারণে থমকে যেতে বসেছে উৎপাদন। অগস্টে মোট ২০৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে পেট্রোকেমের। রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ খরচ হয়েছে ২৮ কোটি। সুদ গুনতে হয়েছে ৩৬ কোটির। গত মাসে ন্যাপথা কিনে সেই খাতেও ২৫৬ কোটি টাকা চুকিয়ে উঠতে পারেনি তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সেই কারণে আপাতত মোট ক্ষমতার ৬০% উৎপাদন করতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি।
এই বেহাল আর্থিক দশার কথা স্বীকার করছেন শিল্পমন্ত্রী তথা সংস্থার চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর দাবি, পরিস্থিতি সামাল দিতে যথাসাধ্য করছে রাজ্য। তিনি বলেন, “উৎপাদন বন্ধ না-করায় দৈনন্দিন খরচ হচ্ছে। তাই লোকসান কিছুটা হবেই।” তাঁর আশ্বাস, শেয়ার নিলামের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। তা শেষ হবে এ মাসেই।
উল্লেখ্য, গত জুনে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি পেট্রোকেমকে নতুন করে ঋণ মঞ্জুরের প্রতিশ্রুতি দেয়। সংস্থার পক্ষ থেকেও বলা হয়, ৫০০ কোটি টাকা পেলে সঙ্কট আপাতত কাটাবে। সরকার জানায়, রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম মারফত ১০০ কোটি টাকা সংস্থায় ঢালা হবে। বাকি ৪০০ কোটি আসবে ব্যাঙ্ক ঋণ থেকে। অগস্টে ব্যাঙ্কগুলি ২০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েওছে। রাজ্যও ঢেলেছে ৫০ কোটি। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে এই টাকায় সমস্যা মিটবে না, মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এই অবস্থায় নতুন অংশীদারের পুঁজির দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই সংস্থার। কিন্তু তা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ, ৩১ অগস্টের মধ্যে আগ্রহী সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে শেয়ার দর জানানোর কথা ছিল। কিন্তু তা করেনি রিল্যায়্যান্স, ইন্ডিয়ান অয়েল-সহ ৫টি সংস্থা। শেয়ার কেনার চুক্তিপত্রে কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। যার উত্তর পাওয়ার পরই দর জানাবে সংস্থাগুলি। ফলে গোটা প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়সূচির (সেপ্টেম্বর) মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার উপর পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে সিরিয়া সমস্যা। কারণ, এ নিয়ে পেট্রোপণ্যের বাজার আদৌ স্বস্তিতে নেই। আর এই সমস্ত অনিশ্চয়তার কারণেই নতুন করে ঋণের টাকা দিতে চাইছে না ব্যাঙ্কগুলি।
গত বছরেও পুজোর সময় পেট্রোকেমে উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল রাজ্য। কারণ দেখানো হয়েছিল কারখানা রক্ষণাবেক্ষণের। এ বারও সেই পুজোর মুখেই ফের নতুন সমস্যার মুখে পড়ল তারা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.