নম্বর ছাড়া ডাম্পারের দৌরাত্ম্য বাড়ছে শহরে
হর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একাধিক নম্বর প্লেটবিহীন ডাম্পার। বেপরোয়া গতিতে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে সহজেই নাগালের বাইরে পালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। শহরবাসীর আশঙ্কা, নম্বর প্লেট না থাকায় এই ডাম্পারগুলিকে প্রশাসনের পক্ষে ধরা মুশকিল। আবার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার আশঙ্কা করছে পরিবহণ দফতর।
দুর্গাপুর শহরের বাসিন্দারা জানান, আগে ইসিএলের কোলিয়ারি এলাকায় কয়লা আনা-নেওয়ার কাজে ডাম্পার ব্যবহার করা হত। কিন্তু গত কয়েক বছরে দুর্গাপুর শহরেও ডাম্পার বেড়েছে বহু গুন। শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় কাঁচামাল পরিবহণে ব্যবহার হয় এগুলি। এছাড়া নির্মাণ ব্যবসার প্রয়োজনে পাথর কুচি, মাটি, বালি নিয়ে আসায় বা বুলডোজার চালিয়ে উঁচু জায়গা সমান করার কাজেও ডাম্পার ব্যবহার হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু ডাম্পারের নম্বর প্লেট নেই। ফলে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনায়াসে পালাতে পারে সেগুলি। বছরখানেক আগে সেপকো এলাকার পাশে এমনই এক ডাম্পার এক মোটরবাইক আরোহীকে ধাক্কা মারে। এ জোনের শিবাজি রোডেও গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা এক স্কুল পড়ুয়াকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় নম্বর প্লেটহীন একটি ডাম্পার। তবে চোট তেমন মারাত্মক না হওয়ায় চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে ওঠে ওই পড়ুয়া। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রোডের বাঁকুড়া মোড়েও ৩০ ডিসেম্বর ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন এক সাইকেল আরোহী। ১২ ফেব্রুয়ারি আড়রা মোড়ের কাছে ডাম্পারের ধাক্কায় একটি গরু মারা যায়। জখম হয় আরও দুটি। স্থানীয় বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া স্নেহাংশু মণ্ডলের দাবি, “আমাদের সামনে দিয়েই ডাম্পারটি দ্রুত পালায়। কিন্তু গাড়িটির কোনও নম্বর না থাকায় কোথাও অভিযোগ জানাতে পারিনি।”

নম্বরপ্লেটের বালাই নেই। পানাগড়ে বাজারে বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।
অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার দুর্গাপুর শাখার কর্মকর্তা সমীর রায়ের অভিযোগ, শুধু ডাম্পার নয়। নম্বর ছাড়া বহু লরিও চলাচল করছে। তিনি জানান, এই সমস্ত ডাম্পার ও লরিতে পিছনের আলো জ্বলে না। ফলে দ্রুতগতির রাস্তায় পিছন থেকে কিছু বোঝা না যাওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। বুদবুদের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে ২০০৫ সালের ২৫ মার্চ রাতে এমনই পিছনের আলোবিহীন লরির সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা লাগায় মারা গিয়েছিলেন দুর্গাপুরের তিন পরিবারের ছয় সদস্য। তাছাড়া অনেক ডাম্পার ও লরিতেই নির্দিষ্টের তুলনায় অনেক ছোট হরফে নম্বর লেখা থাকে। ফলে সামান্য দূর থেকেও নম্বরটি বোঝা যায় না বলে অভিযোগ। সমীরবাবু জানান, পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে এই বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। শুধু সরকারি আধিকারিকদের ভরসায় না থেকে মানুষের সচেতনতার উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকও বলেন, “নম্বর প্লেট না থাকা মানেই সন্দেহজনক। দুর্ঘটনা ঘটলে সেই গাড়িকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাছাড়া রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সম্ভাবনা তো থাকেই।” তাঁর দাবি, মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়। দ্রুত দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে ফের অভিযানের দিন নির্দিষ্ট করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন দুর্গাপুরের মহকুমা পরিবহণ আধিকারিক অনিমেষ সিংহ রায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.