মূক ও বধির এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল রায়গঞ্জ থানার কসবা মহেশো এলাকায়। গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই মহিলার ঘরে ঢুকে পেশায় শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিবেশী এক ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে পেশায় মাছ ব্যবসায়ী অভিযুক্তের দুই বন্ধুর বিরুদ্ধেও। ওইদিন রাতে ওই মহিলার দিদি অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান।
বুধবার দুপুরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন বিকালে রায়গঞ্জ থানায় বিক্ষোভ দেখান আদিবাসী সমাজ শিক্ষন ও সংস্কৃতি সংস্থা এবং রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মেলনীর সদস্যরা। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে দুটি সংগঠনের তরফে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক বলেন, “অভিযুক্ত তিনজনই পলাতক। নির্দিষ্ট মামলা রুজু করে তদন্ত করা হচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, অবিবাহিত মূক ও বধির ওই মহিলা সেলাইয়ের কাজ করেন। পেশায় দিনমজুর ১৭ বছর বয়সী ভাগ্নেকে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন। পাশেই দিদি আলাদা বাড়িতে থাকেন। বাড়ির সামনে দিদির চায়ের দোকান রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ভাগ্নে কাজে বার হয়ে যান। বাড়িতে ওই মহিলা কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করছিলেন। তাঁর দিদি বলেন, “দুপুর আড়াইটে নাগাদ বৃষ্টি শুরু হয়। আমি বোনের খোঁজ করতে তার বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। দরজা আগলে মাছ ব্যবসায়ী প্রতিবেশী দুই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। সন্দেহ হওয়ায় জোর করে ঘরে ঢুকে দেখি শ্রমিক সরবরাহকারী অভিযুক্ত বোনকে ধর্ষণ করে পালানোর চেষ্টা করছে। আমি চিৎকার করতেই তিন জন পালায়।”
আদিবাসী সমাজ শিক্ষন ও সংস্কৃতি সংস্থার জেলা সভাপতি শ্যাম মুর্মু জানান, মূক ও বধির ওই মহিলা হতদরিদ্র। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে ওই মহিলার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা না হলে কয়েকশো আদিবাসী পুরুষ ও মহিলাকে নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য থানা ঘেরাও করা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগে যে তিনজনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে তারা কেউই আদিবাসী সম্প্রদায়ের নন। রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মেলনীর জেলা সম্পাদক উত্তম গুহ বলেন, “আগামী সোমবারের মধ্যে অভিযুক্তরা ধরা না পড়লে অনির্দিষ্টকালের জন্য থানায় অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হবে।” |