কাউন্সিলের অনুমোদন না নিয়ে কলকাতায় রাজারহাটে একটি ফ্ল্যাটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্যপদে ১৪ জন অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের জন্য ৩৫০০ পরীক্ষার্থীকে ইন্টারভিউ ডাকার অভিযোগ উঠেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কলকাতার রাজারহাটে উত্তরা হাউজিং কমপ্লেক্সে ৯-১২ সেপ্টেম্বর চারদিন ধরে ইন্টারভিউ হওয়ার কথা। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলের সদস্যরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে অভিযোগ জানিয়ে ইন্টারভিউ বাতিলের আর্জি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪টি অশিক্ষক কর্মীপদে নিয়োগের সিংহভাগ পরীক্ষার্থী মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার। ফলে মালদহের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলকাতায় ইন্টারভিউ দেওয়ার চিঠি পাঠানোয় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু করতে গেলে কাউন্সিলের অনুমোদন নেওয়া বাধত্যমূলক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাউন্সিলের অনুমোদন না নিয়ে বেআইনিভাবে অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের ইন্টারভিউ মালদহের বদলে কলকাতা একটি ফ্ল্যটে করাচ্ছেন। এই বেআইনি ইন্টারভিউ বন্ধ করার জন্য রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বলেছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল সদস্য দুলাল ঘোষ বলেন, “উপাচার্য কোনও আইন কানুন ও নীতির ধার ধারেন না। গত এক বছরে কাউন্সিলের একটিও মিটিং ডাকেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ জন অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ করা হবে অথচ কাউন্সিলের সদস্যরা জানেন না। উপাচার্য নিজের খেয়াল খুশিমত বিশ্ববিবিদ্যালয় চালাচ্ছেন।”
এদিকে যাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি ইন্টারভিউ ডাকার অভিযোগ উঠেছে সেই উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাস কলকাতা থেকে টেলিফোনে বলেন, “সমস্ত আইন মেনে ইন্টারভিউ ডেকেছি। তিন দিন আগে শিক্ষামন্ত্রীকে সব জানিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রী আর আমার কাছে কিছু জানতে চাননি। ইন্টারভিউ বন্ধ করতেও বলেননি।” কলকাতায় কেন ইন্টারভিউ নেওয়ার জায়গা বাছা হল? এর জবাবে উপাচার্য বলেন, “মালদহে এই ইন্টারভিউ হলে গজ-কচ্ছপের লড়াই হত। গজ কচ্ছপের লড়াইয়ের হাত থেকে বাঁচতেই মালদহ থেকে ইন্টারভিউ কলকাতায় সরিয়ে আনা হয়েছে।”
বতর্মানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অশিক্ষক কর্মীর পদ রয়েছে ৪৯ জন। বর্তমানে ২৭ জন কাজ করছেন ২২টি শূন্যপদের মধ্যে ১৪টি পদে নিয়োগের জন্য এক বছর আগে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, চার মাসের বেশি সময় ধরে উপাচার্য মালদহের বাইরে থাকায় অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের ইন্টারভিউয়ের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। কাউন্সিল সদস্য দুলাল ঘোষের অভিযোগ, “রাজ্য সরকার উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরানোর চিন্তাভাবনা করছে, এটা বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি তিনি কর্মী নিয়োগের ইন্টারভিউ ডেকেছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শ্যাম সুন্দর বৈরাগ্য বলেন, “উপাচার্যের নির্দেশে গত তিনদিন থেকে পরীক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ লেটার পাঠাতে শুরু করেছি। ৩৫০০ পরীক্ষার্থীকে ইন্টারভিউ লেটার পাঠানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।” |