নামমাত্র হাজিরা মোর্চার, হল না জিটিএ বৈঠক
রাজ্যের কড়া পদক্ষেপের ঘোষণার জেরে জিটিএ বৈঠকে গেলেও আপাতত নতুন ‘চিফ এগজিকিউটিভ’ নির্বাচনের পথে হাঁটল না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বুধবার দার্জিলিঙের ভানু ভবনে জিটিএ-র চেয়ারম্যান প্রদীপ প্রধান-সহ ৪ জন সদস্য উপস্থিত হন। তাঁদের মধ্যে দু’জন একটি চিঠি চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়ে বেরিয়ে যান। চিঠিতে ২৯ জন মোর্চা নেতা তথা জিটিএ সদস্যের সই রয়েছে। লেখা হয়েছে, জেলবন্দি জিটিএ সদস্যদের মধ্যে থেকেও কেউ নতুন চিফ নির্বাচিত হতে পারেন। তাই তাঁদের সকলকে মুক্তি দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যান চিঠিটি জিটিএ-এর প্রধান সচিব রামদাস মিনার হাতে দেন। ফলে জিটিএ-র সভা আর শেষ পর্যন্ত হয়নি।
দুপুরে ভানু ভবন থেকে বেরিয়ে প্রদীপ প্রধান বলেন, “যেখানে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, সেখানে আমাদের ৪ সদস্য ছিলেন। কিন্তু আমাদের ১০ জন জিটিএ সদস্য জেলবন্দি। তাঁদের মধ্যে থেকেও কেউ জিটিএ চিফ নির্বাচিত হতে পারেন। সে জন্য সকলের মুক্তি প্রয়োজন। তাই ২৯ জন সদস্য লিখিত ভাবে সে আর্জি জানান। তাই এখন বৈঠক হয়নি। পরে সব জিটিএ সদস্য মুক্তি পেলে ওই বৈঠক হবে।” প্রধান সচিব রামদাস মিনা আগাগোড়াই উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “ওই বৈঠকে মোর্চা সদস্যদের তরফে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা কার্যকর হবে।” সরকারি সূত্রের খবর, এ দিনের সভা না হওয়ায় আগামী ৩০ দিনের মধ্যে চিফ নির্বাচনের সভা ডাকতে হবে। তা না হলে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
এ দিনই মোর্চার প্রতিনিধি দলের তিন জন দিল্লি থেকে পাহাড়ে ফিরেছেন। তবে বন্ধ তোলার বিষয়ে দলীয় পর্যায়ে কোনও আলোচনা হয়নি। গোর্খাল্যান্ড জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির চেয়ারম্যান এনোস দাস প্রধান বলেন, “শুক্রবার বিকেলে বন্ধ তোলার বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা। সে দিনই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।” তার আগে পর্যন্ত পাহাড়ে বন্ধ চলবে বলে কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী কালিম্পঙে ঘোষণা করেছিলেন, নতুন চিফ নির্বাচনের বৈঠকে মোর্চা যোগ না দিলে রাজ্য সরকার জিটিএ-র প্রধান সচিবের মাধ্যমে পাহাড়ে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেবে। পাশাপাশি, বন্ধের অছিলায় অফিসে গরহাজির থাকলে সেই জায়গায় বেকারদের চাকরি দেওয়া, কোনও রেশন দোকান না খুললে তার লাইসেন্স বাতিল করে পাহাড়ের মহিলাদের দিয়ে দেওয়ার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। মোর্চার অন্দরের খবর, ওই ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জিটিএ যাতে হাতছাড়া না হয়, সে জন্য চেয়ারম্যান-সহ কয়েক জনকে বৈঠকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন মোর্চা নেতৃত্ব। কিন্তু আরও কিছুটা সময় নিতে বৈঠক আপাতত মুলতুবি করার পরিকল্পনা করে মোর্চা। সেই মতোই চেয়ারম্যান-সহ ৪ জন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য গেলেও ২৯ জন লিখিত আর্জি পাঠিয়ে তা নথিভুক্ত করার অনুরোধ করেন।
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী যে এলাকায় মঙ্গলবার সভা করেছেন, সেই কালিম্পঙে এ দিন বিশাল মিছিল করেছে মোর্চা। যে মাঠে লেপচাদের অনুষ্ঠান হয়েছিল, সেখানেও মোর্চার কয়েক হাজার সদস্য জমা হয়ে সভা করেন। মোর্চার মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে দার্জিলিং শহর ও কার্শিয়াঙেও। তিনটি এলাকায় মিছিলে ভিড় উপচে পড়ার কথা উল্লেখ করে এ দিন নিজের
‘ফেসবুকে’ মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ দাবি করেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩ (এ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনও রাজ্য ভেঙে আলাদা রাজ্য তৈরি হতেই পারে। বা দুই রাজ্যের অংশ নিয়ে আলাদা রাজ্য হতে পারে। তাই গোর্খাল্যান্ডের দাবি অসাংবিধানিক নয়, দাবি গুরুঙ্গের।
রাজ্যের চাপে পড়ে জিটিএ বৈঠকে উপস্থিত হয়েও তা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য মোর্চা কোথা থেকে সাহস পাচ্ছে, সেই প্রশ্নে এ দিন কেন্দ্রের কংগ্রেসকে বিঁধেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে দার্জিলিঙে গিয়েছিলেন মুকুলবাবু। সেখানে থেকে ফেরার পথে মুকুলবাবুর অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রীর কড়া পদক্ষেপের জেরে মোর্চা নেতারা যখন বন্ধ তোলার কথা ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন, তখন দিল্লি থেকে তলে তলে ওই নেতাদের অক্সিজেন জোগাচ্ছে কংগ্রেস। তাই পাহাড়ে অচলাবস্থা জিইয়ে রাখার দুঃসাহস দেখাতে চাইছেন কয়েক জন জনবিচ্ছিন্ন মোর্চা নেতা।” তিনি বলেন, “দার্জিলিঙের একটা মাত্র লোকসভা আসনের জন্য বাংলাকে ভাগ করার যে ছক কংগ্রেস কষছে তা পাহাড়-সমতল, কোন এলাকার মানুষ বরদাস্ত করবেন না।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.