রহস্যজনক ভাবে বড়জোড়ার এক স্কুলছাত্রকে পানাগড় স্টেশন থেকে উদ্ধার করল জিআরপি। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে। পুলিশ সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া ছাত্র শুভ্রদীপ কর্মকার বড়জোড়ার রায় কলোনির বাসিন্দা ও বড়জোড়া হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
শুভ্রদীপের বাবা শুভেন্দু কর্মকার বুধবার বলেন, “ছেলে মঙ্গলবার স্কুলে গিয়েছিল। তার পর আর বাড়ি ফেরেনি। আমরা বিকেলে বড়জোড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করি। বিকেলের মধ্যেই পানাগড় জিআরপি থেকে ফোন করে ছেলেকে পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়। দুর্গাপুর জিআরপি-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।” খবর পাওয়ার পরই বড়জোড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দুবাবু দুর্গাপুরে গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসেন। কিন্তু, কী ভাবে পানাগড়ে পৌঁছল শুভ্রদীপ?
ঘটনার পিছনে কোনও পাচারকারী চক্রের হাত রয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান করছে জেলা পুলিশের একাংশ ও শুভ্রদীপের পরিবার। স্কুল সূত্রের খবর, স্কুল ছুটির পর শুভ্রদীপ ও তার এক সহপাঠী সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিল। ওই সহপাঠীর বাবা এ দিন বলেন, “ছেলে আমাদের জানিয়েছে, বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ে আসার পর শুভ্রদীপ শিক্ষকের জন্য উপহার কিনতে যাবে বলে অন্য রাস্তা ধরেছিল। তার পর থেকেই তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।” শুভ্রদীপের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সে ভাল করে কথা বলতে পারছে না। ঘটনা সম্পর্কে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে সে কিছুই মনে করতে পারছে না। শুধু বলছে, ‘আমার কোনও হুঁশ ছিল না। যখন হুঁশ ফিরল তখন দেখি পানাগড় স্টেশনে আছি’। শুভেন্দুবাবু বলেন, “মঙ্গলবার রাতে পানাগড় স্টেশনে রেলপুলিশের কর্মীদের সামনে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে শুভ্রদীপ। তার পর বাড়ির ফোন নম্বর দেয়। ফোনেই জিআরপি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।” এ দিন বড়জোড়া থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় শুভ্রদীপকে। কিন্তু সে পুলিশকে কিছুই জানাতে পারেনি। তার সাইকেলটি খোওয়া গেছে বলেও পরিবার জানিয়েছে।
রবীনবাবু বলেন, “ছেলেকে আর একা ছাড়ার সাহস পাচ্ছি না। তাই স্কুলে নিয়ে যাওয়া ও আসার কাজ এখন আমিই করছি।” স্থানীয় বাসিন্দা অনিমেষ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “আমার ছেলে দুর্গাপুরে পড়তে যায়। এই ঘটনার পরে আমরা বেশ ভয়ে আছি।” পুলিশ যাতে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে, সেই দাবি তুলছেন এলাকাবাসী। বড়জোড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাল্গুনীবাবুর কথায়, “শুভ্রদীপকে সুস্থ ভাবে ফিরে পেয়েছি, এটাই বড় কথা। এই ধরনের ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ করুক পুলিশ।” বাঁকুড়ার ডিএসপি (প্রশাসন) অম্লান ঘোষ বলেন, “পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বড়জোড়ার ছাত্রছাত্রীরা যাতে পুরো নিরাপত্তা পায়, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।” |