|
|
|
|
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় |
লটারিতে শিকে ছিঁড়লে দেখা মিলবে রাষ্ট্রপতির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাষ্ট্রপতিকে কাছ থেকে দেখতে চান? শুনতে চান কথা? ভাগ্যে না থাকলে কিন্তু শিকে ছিঁড়বে না! অন্তত ১৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির দর্শন পেতে ভাগ্যই ভরসা।
বিদ্যাসাগর স্মারক বক্তৃতা দিতে ১৫ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। দূরশিক্ষা বিভাগের ‘বীরেন্দ্রনাথ শাসমল’ অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আগ্রহী সকলেই। কিন্তু অডিটোরিয়ামে স্থান হবে টেনেটুনে দু’শো জনের। সমস্যা সমাধানে লটারির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্থির হয়েছে, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী থেকে আধিকারিকদের মধ্যে কারা অডিটোরিয়ামে থাকতে পারবেন, লটারির মাধ্যমেই তা ঠিক করা হবে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “স্থান না হওয়ার কারণেই লটারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।”
অন্যত্র অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেত না? কর্তৃপক্ষ জানান, সকলেই চান, রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখুন। না হলে শহরের অন্য কোনও জায়গায় অনুষ্ঠান করা যেত। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মঞ্চ তৈরি করেও তো অনুষ্ঠান হতে পার? উপাচার্যের যুক্তি, “এটা বর্ষাকাল। তা ছাড়া রাষ্ট্রপতির জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টারা জানান, অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান হলেই ভাল হয়।”
লটারির সিদ্ধান্ত শুনে সকলেরই মুখ ভার। এত দিন রাষ্ট্রপতির আসার খবরে হইহই পড়ে গিয়েছিল। এখন উৎসাহে ভাটা পড়েছে। বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক অরিন্দম গুপ্ত বলেন, “আমি মর্মাহত। রাষ্ট্রপতির মতো এক জন ব্যক্তিত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন, আর আমরা থাকতে পারব না।” উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অমল মণ্ডলের বক্তব্য, “রাষ্ট্রপতির গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য কাছ থেকে শুনতে পারব না! ভাবতেই অবাক লাগছে।” তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক ইন্দ্রাণী দত্ত চৌধুরীর কথায়, “এই প্রথম রাষ্ট্রপতি আসছেন। শুনে ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। পরে ততটাই দুঃখ পেয়েছি। সংগঠনগত কারণে প্রবেশপত্র পেয়েছি। কিন্তু খারাপ লাগছে, সহকর্মীরা, ছাত্রছাত্রীরা সকলে যেতে পারবেন না।”
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও বড় অডিটোরিয়াম নেই। দূরশিক্ষা বিভাগের ‘বীরেন্দ্রনাথ শাসমল’ অডিটোরিয়ামে ২০০ জন ধরে। তার মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার জন্য জনা পঞ্চাশেকের আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল, কোর্টের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০। এ ছাড়াও রয়েছে আধিকারিক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন ও ছাত্র সংসদ। প্রতিটি সংগঠনের অন্তত এক জনকে প্রবেশপত্র দিতে হবে। ঠাঁই দিতে হবে সব বিভাগীয় প্রধানকে। সব মিটিয়ে বাকি থাকবে বড় জোর ৫০টি আসন। সেখানে
কারা জায়গা পাবেন, সে জন্যই লটারি করা হবে।
কী প্রক্রিয়ায় হবে লটারি?
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ জন্য প্রতিটি বিভাগে আবেদনপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। উৎসাহী ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিকেরা তা পূরণ করে জমা দেবেন। তারপর লটারির মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ১০ জন, আধিকারিকদের মধ্যে থেকে ৭ জন, অশিক্ষক কর্মীদের মধ্যে থেকে ৭ জনকে, গবেষক ছাত্রদের মধ্যে থেকে ৩ জন এবং ছাত্রদের মধ্যে থেকে ৭ জনকে বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছেন ‘ডিন অব স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার’ জয়ন্ত কিশোর নন্দী। সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, “বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকবে একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন। সেখান থেকে সকলেই রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শুনতে পারবেন।” |
|
|
|
|
|