|
|
|
|
লোকসভায় পেনশন বিল পাশ, পাশে রইল বিজেপি
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মনমোহন সিংহ বলেছিলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কিছু কঠিন সংস্কার প্রয়োজন। তার জন্য দরকার রাজনৈতিক ঐকমত্য। সেই কঠিন সংস্কারগুলির মধ্যে একটি কাজ আজ সেরে ফেলল সরকার। বিজেপির সমর্থন নিয়েই লোকসভায় পাশ হল পেনশন বিল। বিজেপির দাবি ছিল, পেনশন তহবিল থেকে ন্যূনতম আয় নিশ্চিত করা হোক। অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ঘোষণা, যে সব পেনশন প্রকল্প থেকে ন্যূনতম নিশ্চিত আয় মিলবে, পেনশন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ সেগুলির নাম ঘোষণা করবে। সে অনুযায়ী ওই প্রকল্পগুলিতে লগ্নির অনুমতি দেওয়া হবে।
লোকসভার পর জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিলটি আজ রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গিয়েছে। এ বার ‘পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল’টিও রাজ্য সভায় পাশ হয়ে গেলে নতুন বিদেশি লগ্নি আসবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। যার সাহায্যে বিদেশি মুদ্রার আয়-ব্যয়ে ফারাক ঘুচিয়ে টাকার দামের পতন রুখতে চাইছেন তিনি। কারণ এই বিলে ২৬ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির পরিমাণ ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশ করা গেলে পেনশন ক্ষেত্রেও তা কার্যকর হবে। যদিও এখনই বিমা বিল পাশের আশা কম। কিন্তু বিদেশি সংস্থাগুলি এই মুহূর্তে কতটা আগ্রহ দেখাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিমা ও মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দেওয়ার পরে বেশ কিছু বিদেশি সংস্থা এসেছিল। কিন্তু বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। আইএনজি এবং নিউইয়র্ক লাইফের মতো বড় সংস্থা বিমা ক্ষেত্র থেকে বিদায় নিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, পেনশন বিল পাশের ফলে শিল্পমহলে ইতিবাচক বার্তা যাবে। নতুন বিলের সুবাদে পেনশন তহবিলের অর্থ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুযোগ মিলবে। কারণ নতুন বিলের প্রধান উদ্দেশ্য, নিউ পেনশন স্কিম (এনপিএস)-এ তহবিল পরিচালনার জন্য তৈরি পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বিধিবদ্ধ সংস্থার মর্যাদা দেওয়া। এই মুহূর্তে পেনশন তহবিলের পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় কেন শেয়ার বাজারে খাটানো হবে, বামেরা তা নিয়ে অতীতের মতোই আপত্তি তুলেছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, নতুন পেনশন প্রকল্পে যাঁরা টাকা রাখছেন, তারা এখন আরও বেশি ভরসা পাবেন। কারণ ২০০৩ সালে এই কর্তৃপক্ষ তৈরি হলেও তাকে বিধিবদ্ধ সংস্থার মর্যাদা দেওয়া হয়নি। নতুন বিলে তা করা হচ্ছে। নিয়ম ভাঙলে এই কর্তৃপক্ষ এ বার শাস্তির ব্যবস্থা করবে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারির পর থেকে যারা কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাদের জন্য নতুন পেনশন প্রকল্প বাধ্যতামূলক। ব্যতিক্রম সামরিক বাহিনী। ২৬টি রাজ্য সরকারও এই প্রকল্পে যোগ দিয়েছে। ২০০৯ সালের মে মাস থেকে দেশের সব নাগরিক, এমনকী অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্যও নতুন পেনশন প্রকল্প খুলে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এখন ৫২ লক্ষ ৮৩ হাজারেরও বেশি কর্মচারী এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত। ২ লক্ষের বেশি বেসরকারি কর্মচারীও রয়েছে।
পেনশন ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায়। এনডিএ-আমলেই নতুন পেনশন প্রকল্প চালু হয়। সেই কারণেই নীতিগত ভাবে বিলের বিরোধিতা করা বিজেপির পক্ষে কঠিন ছিল। |
পুরনো খবর: সংস্কারে আরও গতি চায় কেন্দ্র
|
|
|
|
|
|