সল্টলেক
এ বার এক রাতে তিন জায়গায় চোরের হানা
৪ ঘণ্টার ব্যবধানে একই কায়দায় ফের চুরি হল সল্টলেকে। এ বার দু’টি বাড়ি ও একটি সরকারি অফিসে। সোমবার রাতে বিই ব্লকের পরে মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে বিধাননগর উত্তর থানা এলাকার সি এফ এবং এ ই ব্লকে। যদিও এ ই ব্লক ও সরকারি অফিসে চুরির ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে দাবি পুলিশের।
কিন্তু পরপর দু’দিন চুরির ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশি নজরদারি। পুলিশকর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে। নজরদারি বাড়িয়ে দ্রুত অপরাধী ধরতে পারায় অপরাধ কমেছে সল্টলেকে। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ আগের থেকে সক্রিয় হলেও নজরদারিতে গাফিলতি রয়ে গিয়েছে। তা না হলে পরপর দু’দিন চুরি করে দুষ্কৃতীরা পালাতে পারত না।
সোমবার রাতে বি ই ব্লকে দরজার গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার রাতে সি এফ ব্লকের একটি বাড়িতে একই ভাবে ঢুকে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও একটি হিরের দুল নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। ওই বাড়ির বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা রায়চৌধুরী পুলিশকে জানিয়েছেন, বাড়ির পরিচারিকা বুধবার ঘুম থেকে উঠে দেখেন, ঘর লন্ডভন্ড। তিনিই সকলকে ডেকে তোলেন। তার পরে জানলার গ্রিল কাটার বিষয়টি নজরে আসে। খবর দেওয়া হয় বিধাননগর উত্তর থানায়। পুলিশ জানায়, ওই ব্লকে এর আগেও চুরির ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
চুরির ধরন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, বি ই ব্লকের মতো সিএফ ব্লকেও একই কায়দায় চুরি হয়েছে। প্রথমে সদর দরজার লক ভাঙার চেষ্টা করা হয়। পরে বাড়ির এক দিকের জানলা খোলা দেখে সেখানকার একটি ছোট্ট অংশের গ্রিল কাটে দুষ্কৃতীরা। এর পরে একতলায় শর্মিষ্ঠাদেবীর শ্বশুর-শাশুড়ি যে ঘরে শুয়েছিলেন, সেই ঘরে ঢুকে ড্রয়ার থেকে আলমারির চাবি হাতায়। আলমারি থেকে গয়নার বাক্স বার করে টাকা ও দুল নেওয়ার পরে অন্য বাক্সগুলি ডাইনিং রুমে এনে তছনছ করে। কিছু না পেয়ে একতলার অন্য ঘরগুলিও লন্ডভন্ড করে তারা।
পুলিশ জেনেছে, একতলার পরে দোতলায় শর্মিষ্ঠাদেবী ও তাঁর স্বামী যে ঘরে শুয়েছিলেন, সেখানেও ঢোকার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় তারা ঢুকতে পারেনি। কিন্তু অন্য ঘরগুলিতে বিভিন্ন সামগ্রী ঘাঁটাঘাঁটি করে তারা। তবে কম্পিউটার, ল্যাপটপ-সহ দামি জিনিসে হাত দেয়নি। এমনকী, পালানোর আগে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানীয়ের প্যাকেটও বার করেছিল তারা। যদিও সেটি ফেলে রেখেই চম্পট দেয়। রায়চৌধুরী পরিবারের অনুমান, যেটুকু গ্রিল কাটা হয়েছে, সেখান দিয়ে কোনও কিশোর ছাড়া কারও পক্ষে ঢোকা সম্ভব নয়।
দু’দিনের চুরির ক্ষেত্রেই বাড়ির কেউ কিছু টের পাননি। অথচ দুষ্কৃতীরা যে কোনও ঘুমের ওষুধ স্প্রে করেছে, তেমন সূত্রও মেলেনি। এই বিষয়টি ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
শুধু এই চুরিটিই নয়। মঙ্গলবার সল্টলেকের এ ই ব্লকের একটি বাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ ও তিনটি মোবাইল এবং একটি সরকারি অফিস থেকে একটি ল্যাপটপ চুরির ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুলিশ ওই দু’টি ঘটনা অস্বীকার করেছে।
বাসিন্দাদের সংগঠন ‘সল্টলেক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “পুলিশ আগের থেকে অনেক বেশি উদ্যমী। কিন্তু অপরাধ যেন থামছেই না। জনসংযোগ বাড়ালে সমস্যা কমবে বলে মনে হয়। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বাসিন্দাদেরও আরও বেশি করে সচেতন হতে হবে।” সল্টলেক শাখার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণকলি লাহিড়ী বলেন, “দু’টি ক্ষেত্রেই চুরির কায়দা এক। মনে হচ্ছে কোনও চক্র সক্রিয় হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কিনারা হবে।” পুলিশি নজরদারিতে গাফিলতির অভিযোগের জবাবে এক পুলিশকর্তা বলেন, “নজরদারি আগেও ছিল, এখনও আছে। একটি ঘটনা ঘটেছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকব।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.