কেউ স্রেফ স্ত্রীকে সন্দেহ করে, আবার কেউ স্ত্রী খোরপোশ চাওয়ায় তাঁকে কুপিয়ে খুন করলেন বলে অভিযোগ। বুধবার অন্ডালের নাজিরবাদ ও ছোড়াগ্রামে ঘটনা দু’টি ঘটে। মৃতদের নাম নাসিফা বেগম (২৫) ও রুমা বাউড়ি (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ রাস্তার মাঝে নাসিফার পথ আটকে দাঁড়ায় তাঁর স্বামী আসিফ আনসারি। দু’চার কথা হতে না হতেই আসিফ স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র গিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন নাসিফা। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তার পাশে কল থেকে জল নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। হঠাৎ দেখেন আসিফ ছেনি, হাতুড়ি, চপার নিয়ে আসছে। উল্টোদিক থেকে আসছিলেন নাসিফাও। আচমকা নাসিফার চিৎকার শুনে কিছু বোঝার আগেই তাঁরা দেখেন আসিফ দৌড়ে পালাচ্ছে। সামনের এক পুকুরে সে অস্ত্রগুলি ফেলে পালায় বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। নাসিফার মা জারিনা খাতুন অন্ডাল থানায় বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, আসিফ আসরফের সঙ্গে নাসিফার বিয়ে দেওয়ার পরে তাঁরা জানতে পারেন তার আগের বিয়ে করা আরও দুটো বউ আছে। তা জানার পরেই আসগরপল্লিতে বাপের বাড়ির পাশে ঘর ভাড়া দিয়ে থাকতে শুরু করেন নাসিফা। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নেওয়ায় শুরু করেন তিনি।
জারিনা খাতুনের দাবি, “এ সব জানতে পেরে আসরফ প্রায়ই বিবাহবিচ্ছেদের জন্য পথেঘাটে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু নাসিফা উপযুক্ত খোরপোশ না পেলে বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হয় না। মুম্বই থেকে সাতদিন আগে নাজিরবাদে দিদির বাড়ি আসে আসরফ। কিন্তু এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতে পারছি না।” পুলিশের কাছে উপযুক্ত শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) এসএস মুরগান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। খোঁজ চালিয়ে অভিযুক্ত আসিফ আনসারিকে বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
ছোড়াগ্রামের ঘটনাতেও স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বোনকে বাচাতে গিয়ে জখম হয়েছেন দুই দিদিও। তাঁরা রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। মৃত রুমা বাউড়ির ভাই সঞ্জয় বাউড়ির অভিযোগ, চারবছর আগে বারাবনির বিজারী গ্রামের রাম বাউড়ির সঙ্গে বিয়ে হয় রুমার। বিয়ের পর থেকেই রুমা অবৈধ সম্পর্কে জড়িত বলে সন্দেহ করত তাঁর স্বামী। শনিবার রুমা তাঁর স্বামীর সঙ্গে ছোড়াগ্রামে তাঁর দিদি লক্ষ্মীদেবীর বাড়িতে আসেন। মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে যান রামবাবু। তাঁর দিদি নার্সিংহোমের শয্যায় শুয়ে বলেন, “আমরা বিকালে তিন বোন পরিত্যাক্ত খনির জলে স্নান করতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ রাম একটা ঝোঁপ থেকে বেরিয়ে রুমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। বাধা দিতে গিয়ে আমরাও জখম হই। চিৎকার করে লোক ডাকতে থাকি। এরই মধ্যে রাম উধাও হয়ে যায়।” পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তের তল্লাশি চলছে। |