এ বার ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’-এর দেখা মিলবে ত্রিপুরাতেও।
ওড়িশার নন্দনকানন, রাজস্থানের রণথম্ভোর, উত্তরাখণ্ডের জিম করবেট জাতীয় উদ্যানের ধাঁচে ‘টাইগার-সাফারি’ হবে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যেও। ‘সেন্ট্রাল জু অথরিটি’র কাছ থেকে এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই সবুজ সংকেত মিলেছে।
বন দফতরের উচ্চপদস্থ অফিসার অজিত ভৌমিক জানান, ‘‘শহরের উপকণ্ঠে একটি জায়গা পরিদর্শনের পর ওই সাফারি তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা। টাকার জোগাড় হলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগরতলা থেকে ১০-১২ কিমি দূরে মোহনপুর-সিমনা সড়কের পাশে গাঁধীগ্রামে বন দফতরের একটি জমি রয়েছে। সেখানেই ওই প্রকল্প গঠনের পরিকল্পনা করেছে ‘স্টেট ওয়াইল্ডলাইফ বোর্ড’। অজিতবাবু জানিয়েছেন, বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সে কারণে সাফারি গড়তে সরকারি সাহায্য পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বন দফতরের ওই কর্তা জানান, কয়েকদিন আগে ত্রিপুরার সিপাহিজলা চিড়িয়াখানায় সিংহের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণে রাজ্যে ‘লায়ন সাফারি’ তৈরির পরিকল্পনাও করা হয়। কিন্তু সে প্রস্তাব নাকচ করে দেয় কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ। পরিবর্তে অনুমোদন দেওয়া হয় ‘টাইগার সাফারি’র। তিনি জানিয়েছেন, সাফারিতে দেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানা থেকে বাঘ নিয়ে আসা হবে। গাঁধীগ্রামে ‘ডিয়ার সাফারি’ এবং ‘প্রজাপতি পার্ক’ও তৈরি করবে বন দফতর। রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সিপাহিজলা চিড়িয়াখানায় হরিণের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সে কারণেই ‘ডিয়ার সাফারি’ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। দক্ষিণ ত্রিপুরার তৃষ্ণা অভয়ারণ্যেও ডিয়ার সাফারি তৈরি হবে।
বন দফতরের কর্তা দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, ‘প্রজাপতি পার্ক’ তৈরির প্রস্তাব রাজ্যের বনমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। ত্রিপুরাতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া যায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সে গুলিই সংগ্রহ করে ওই উদ্যানে রাখা হবে। প্রজাপতিদের আকৃষ্ট করতে সেখানে বিশেষ ধরনের গাছপালা থাকবে। থাকবে নানা লতা-গুল্ম, ফুল-ফলের গাছও।
প্রাথমিক পর্যায়ে ‘ডিয়ার সাফারি’ এবং ‘প্রজাপতি পার্ক’ তৈরি হবে। পরবর্তীকালে টাকার জোগাড় হলে কাজ শুরু হবে ‘টাইগার সাফারি’র। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যেই ওই প্রকল্পগুলির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসনের আশা। বন দফতরের বক্তব্য, তিনটি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমির অধিকাংশই পাওয়া গিয়েছে। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কিছু জমিও সংগ্রহ করতে হবে। বনকর্তাদের আশা, জমি-সংকটে প্রকল্পগুলির কাজ বন্ধ হবে না। তাঁরা বলছেন, তিনটি উদ্যান তৈরি হলে সাধারণ মানুষের বিনোদনের সুযোগ মিলবে। পাশাপাশি, জৈব-বৈচিত্র্য জানার সুযোগও বাড়বে সকলের। |