দু’টি ব্লকে দুর্গত ৭০ হাজার
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
উত্তরপ্রদেশ ও বিহার এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জেরে মালদহে গঙ্গা নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার দুপুর ১২টা মানিকচকে গঙ্গা জলস্তর চরম বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ২৫.৭৪ মিটার উচ্চতায় বইছে। জারি রয়েছে লাল সতর্কতা। হঠাৎ করে দ্রুত গঙ্গার জলস্তর বাড়ায় মানিকচক ও কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বন্যা দুর্গতদের দুর্ভোগ চরম আকার নিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রবিবার রাত থেকে মানিকচকের ১৫টি এবং কালিয়াচক-৩ ব্লকের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুই ব্লকে বন্য দুর্গতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ হাজার। ইংরেজবাজারের খাসকোল এলাকাতেও জল ঢুকে পড়েছে।
রাজ্য সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকরণে জানান, মালদহ জেলায় গঙ্গার জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে যাতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “বিহার, উত্তরপ্রদেশের প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি, নেপালের বৃষ্টির জলও কোশী নদী হয়ে এই রাজ্যে ঢুকেছে। ফলে জল বাড়ছে।” |
|
জলমগ্ন মানিকচকের গোপালপুর। সোমবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
এরই মধ্যে গত রবিবার বিকালে কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের কুম্ভিরা এলাকায় জলে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে দুই ভায়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম আবদুল সিরাজ (৯) এবং রুবেল শেখ (১০)। আবদুল রূবেলের পিসির ছেলে। দুই জলমগ্ন এলাকায় নদীর ধারে মাছ ধতে গিয়েছিল। সেই সময় দুই জনই গঙ্গায় তলিয়ে যায়।
সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার (গঙ্গা) অমরেশকুমার সিংহ জানান, ২০০৩ সালের পর গঙ্গার জল এত বাড়েনি। ১০ বছরের মধ্যে মালদহে গঙ্গার জলস্তর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। যেভাবে জল বাড়ছে তাতে গঙ্গার জল আরও ২-৩ দিন বাড়বে। জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার জানান, উত্তরপ্রদেশে শোন নদীর একটি বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার ফলে মালদহে গঙ্গার জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টিও হচ্ছে। মানিকচক ও কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বন্যা কবলিত এলাকায় জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে পাঁচটি ও মানিকচকের গোপালপুরে একটি শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে দুর্গতদের রান্না করা খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৮ হাজার পলিথিন বিলি করা হয়েছে। জল বাড়ার ফলে অতিরিক্ত ৭ হাজার পলিথিন দুই ব্লকে পাঠানো হয়েছে। তবে ত্রাণ বিলি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কালিয়াচকের কংগ্রেস বিধায়ক ইশাখান চৌধুরী। তিনি বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ বিলি হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। ২৫ দিন ধরে শোভাপুর, পারদেওনাপুরের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ জলবন্দি হয়ে আছেন। কয়েকদিন ত্রাণ দিয়ে বেশিরভাগ বন্যা কবলিত এলাকার ত্রাণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
|
গঙ্গায় ফের লাল সতর্কতা |
• উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে টানা বৃষ্টি। |
• মানিকচকে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে নদী। |
• দু’টি ব্লকের ২০টি গ্রাম প্লাবিত। |
• প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ বিলি হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। |
|
পুরনো খবর: মালদহে বিপদসীমা ছাড়িয়ে বইছে গঙ্গা |
|