|
|
|
|
দুষ্কৃতী-গুলিতে মৃত্যু মালদহের জমি ব্যবসায়ীর
নিজস্ব সংবাদাদাতা • মালদহ |
অপহরণ করতে আসা দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হল এক জমি ব্যবসায়ীর। রবিবার রাতে কালিয়াচকের জালালপুরের সেলিমপুর ভোলিটোলা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণকারীরা জমির ব্যবসায়ী আকবর আলি বিশ্বাসকে গুলি করে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। সোমবার ভোরে পুলিশ গুলিবিদ্ধ অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে। ঘটনার মূল অভিযুক্ত রঞ্জন পালকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যবসায়ীকে লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছিল। অপহরণকারীদের ছোড়া ৯টি গুলি ওই ব্যবসায়ীর বুকে, পেটে, পায়ে, হাতে-সহ দেহের বিভিন্ন অংশে লেগেছে। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যবসায়ীকে প্রথমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়। তবে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জমি বিক্রির টাকার লেনদেন নিয়ে অপহৃত ব্যবসায়ীর সঙ্গে ধৃত রঞ্জন পালের গোলমাল চলছিল। টাকা না পেয়ে রঞ্জন পাল ভাড়াটে দুষ্কৃতীদের সাহায্যে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেন। ঘটনার সময় ওই ব্যবসায়ী অপহরণকারীদের লক্ষ্য করে হাঁসুয়া চালান। তাঁকে গুলি করা হয়েছে। একজনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ শহরের মনস্কামনা রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন রঞ্জন পাল। পাঁচ বছর আগে রঞ্জন পালের সঙ্গে জালালপুরের আকবর আলি জমির ব্যবসা করতেন। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে গোলমাল শুরু হয়। দিনের পর দিন আকবর আলি বিশ্বাস ধৃতকে টাকা ফেরৎ দিচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, টাকা না পেয়ে ৪ বছর আগে ধৃত আকবর আলি বিশ্বাসকে অপহরণ করেছিল। প্রায় তিন মাস পর মোটা টাকা দিয়ে ছাড়া পান আকবর আলি। এর পরে ২০১১ সালে আকবর আলির ছেলে জাহাঙ্গির বিশ্বাসকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে রঞ্জন পালের বিরুদ্ধে। মাস খানেক পর পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করেন আকবর আলি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানিয়েছে, আকবর আলি বিশ্বাস বাড়িতেই একটি মুদির দোকানের ব্যবসা করেন। রবিবার রাত সাড়ে আটটায় মুদির দোকানে বসেছিলেন আকবর আলি। সেই সময় একটি ছোট গাড়িতে রঞ্জন পাল চারজন ভাড়াটে দুস্কৃতীকে নিয়ে আকবর আলির দোকানে হানা দেন বলে অভিযোগ। প্রথমে আকবর নিজেকে বাঁচাতে অপহরণকারীদের লক্ষ্য করে প্রথমে হাঁসুয়া চালানো শুরু করেন। এতে একজন অপহরণকারী জখম হয়। এরপরই দুষ্কৃতীরা গুলি চালাতে শুরু করেন। ওই ব্যবসায়ী লুটিয়ে পড়তেই তাঁকে গাড়িতে তুলে মালদহের দিকে পালায়।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, অপহরণকারীরা গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ীকে রতুয়ার এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে ব্যবসায়ীর শরীরে থাকা গুলি বার করার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি জানতে পারে পুলিশের এক ‘সোর্স’। সেই পুলিশকে খবর দেন। কালিয়াচক থানার পুলিশ রতুয়ার নূরপুরের কাছে হানা দিয়ে গুলিবিদ্ধ অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ও রঞ্জন পালকে গ্রেফতার করে। ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী নূরশেদা বিবি বলেন, “এর আগেও স্বামী ও ছেলেকে রঞ্জন পাল অপহরণ করেছিল। মোটা টাকা গিয়ে স্বামী ও ছেলেকে উদ্ধার করেছিলাম। এবার ফের টাকার জন্য হামলা করে।” |
|
|
|
|
|