দাঁত দিয়ে কলম ধরে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেছিল নাসিমা। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের শাসনের বারমল্লি গ্রামের এই প্রতিবন্ধী মেয়ে এখন প্রথম বর্ষের ছাত্রী। চার বছর বয়স থেকেই হাঁটাচলা করতে পারত না নাসিমা। তবু মনের জোরেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে সে। এ ভাবেই যাতে সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, তার জন্য শনিবার প্রদেশ কংগ্রসের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক খালেক ইবাদুল্লাহ তাঁর বাড়ি গিয়ে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন ।
নাসিমার দাদা আবুল হাসান জানান, চার বছর বয়সে জ্বর হয় নাসিমার। সেরে যাওয়ার পরে হাত পা কুঁচকে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। আবুল বলেন, “অন্য ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতে দেখলে ও কান্নাকাটি জুড়ে করত। স্কুলে যেতে চাইত। শেষ পর্যন্ত একদিন আমরা ওকে কোলে করে স্কুলে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিই। স্কুলের এক মাস্টারমশাই প্রথমে ওর পায়ের আঙুলে পেনসিল ধরিয়েছিলেন। কিন্তু ও লিখতে পারেনি। এর পরে হাতে পেনসিল ধরানোর পরেও যখন লিখতে পারল না, তখন রেগে গিয়ে ওর মুখে পেনসিল দিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষক। তার পর থেকে একটু একটু করে লিখতে শেখে ও।”
নাসিমার দুই ভাই মূলত ভাগচাষির কাজ করেন। উপার্জন সামান্যই। আবুল জানান, নাসিমার জন্য সারাক্ষণই কাউকে না কাউকে বাড়িতে থাকতে হয়। বর্তমানে বেড়াচাঁপার শহিদুল্লাহ স্মৃতি কলেজে কলাবিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্রী নাসিমা। আবুল বলেন, “নাসিমার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা বিশেষ গাড়ি দিয়েছে। পঞ্চায়েত অফিসে ভাতার জন্য অনেকবার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কিছু হয়নি।”
নাসিমা যদি আরও পড়াশোনা করতে চায়, তাহলে ওঁকে আরও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন। নাসিমার ছোট বোনকে চাকরি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইতিমধ্যে আর্জিও জানানো হয়েছে বলে বলে জানান ইবাদুল্লাহ। |