|
|
|
|
খন্দপথে বাসে ঝাঁকুনি, গর্তে লরির চাকা |
আনন্দ মণ্ডল • পাঁশকুড়া
জেলা শহরগুলির ব্যস্ততম পথ। প্রায় সর্বত্র বেদখল। নিত্যযাত্রীর দুর্ভোগ
সরেজমিনে দেখছে আনন্দবাজার। আজ দ্বিতীয় কিস্তি। |
নামেই স্টেশন রোড। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় পিচের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বৃষ্টি হলে বড় বড় গর্তে জল জমে কাদায় মাখামাখি। রোদ উঠলে চারদিক ধূলোয় ধূলোময়। এমনই বেহাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া স্টেশন রোড। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে থাকলেও তা মেরামতে উদ্যোগী হয়নি কেউ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পাঁশকুড়া থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত থার্ড রেললাইন তৈরির সময় ভারী মালবাহী গাড়ি চলাচল করার ফলেই স্টেশন রোডের এই অবস্থা। রেল দফতরের পাঁশকুড়া শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার মহেশচন্দ্র মিনা তা মেনে নিয়ে বলেন, “স্টেশন থেকে তমলুক রেলপুল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা মেরামতির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড ওই সড়কের মেরামতির কাজ করবে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় অন্যতম ব্যস্ত স্টেশন পাঁশকুড়া। জংশন স্টেশন থেকে চলে গিয়েছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল ও দিঘাগামী রেলপথ। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের কাছে নিকটবর্তী রেলস্টেশন এই পাঁশকুড়া। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক, হলদিয়া, তেরপেখ্যা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের আষাড়ী, ত্রিলোচনপুর, ডেবরা, লোয়াদা, ট্যাবাগেড়িয়া, বালিচক, মেদিনীপুরগামী রুটের বাস চলে স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে। |
|
বেহাল পাঁশকুড়া স্টেশন রোড।—নিজস্ব চিত্র। |
পাঁশকুড়া স্টেশনের পাশেই জেলা পরিষদের রাস্তার উপরে প্রতিদিন গভীর রাত থেকে চলে পাইকারি সব্জিবাজার। এর জন্য পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু লরি আসে স্টেশন রোড ধরে। স্টেশনের কাছেই পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ-সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে খড়্গপুরগামী রেললাইনের ধার বরাবর তমলুক পুল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা বাস, ট্যাক্সি ও মালবাহী লরি চলাচলে সদা ব্যস্ত। এ হেন রাস্তার বেশিরভাগ অংশই এক বছরের বেশি হল এবড়ো-খেবড়ো হয়ে পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার বেরা জানান, পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন দুই জেলার বিভিন্ন রুটে ১২০টির বেশি বাস চলাচল করে। স্টেশন রোড দিয়েই যাতায়াত করে বাসগুলি। রাস্তা খারাপ হওয়ায় বাসগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বারবার বাস সারাতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বাস মালিকদেরও। বেশি সমস্যা হয় মালবাহী গাড়ির। পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারের ফল ব্যবসায়ী আশিস নায়েক জানান, রাস্তা খারাপ বলে খুচরো ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে আসতে চান না এখন। ফলে পাইকারি ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে। পাঁশকুড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সনৎ সাবুদ বলেন, “রাস্তার গর্তে পড়ে প্রায়ই গাড়ি বিকল হচ্ছে। ঝামেলা এড়াতে এই রাস্তায় আসাই বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।”
এ দিকে, রাস্তার স্টেশন সংলগ্ন বেশ কিছুটা অংশ হকারদের দখলে চলে গিয়েছে। সরু রাস্তায় যানবাহনের ওই দাপটের মাঝে যা যথেষ্ট বিরক্তিকর। হকারদের তুলে দেওয়া হচ্ছে না কেন? রাস্তা সারানোর মতো এই দায়িত্বও রেলের ঘাড়ে ঠেলেছেন পাঁশকুড়ার তৃণমূলের পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান তিনি বলেন, “ওই রাস্তা মেরামতির জন্য পুরসভার তরফে রেল দফতরের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। হকারদের তোলার কাজও রেলকেই করতে হবে।” |
|
|
|
|
|