|
|
|
|
রেলশহরে নিত্য ভোগান্তি |
রাস্তা আটকে অবৈধ দোকান, উচ্ছেদের পরেও ফের গজাচ্ছে |
দেবমাল্য বাগচি • খড়্গপুর |
রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে রয়েছে সাইকেল, মোটর বাইক। রাস্তা জুড়ে দোকানও রয়েছে। সদ্য সম্প্রসারিত রাস্তাতেও জবরদখল করে চালু হয়েছে দোকান। আর তার জেরে রেলনগরী খড়্গপুরে সঙ্কীর্ণ পথে দুর্ভোগে পড়ছেন আমজনতা। পরিস্থিতির জন্য আঙুল উঠছে রেল ও পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে।
১৮৯৮ সালে রেলের কারখানা তৈরির পর থেকে ক্রমেই খড়্গপুরের গুরুত্ব বেড়েছে। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ জনবসতির এই শহর এখন ‘মিনি-ইন্ডিয়া’। বিভিন্ন প্রদেশের লোকের বসবাস এখানে। কাজের সূত্রেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই সংকীর্ণ হয়েছে রাস্তা। ফুটপাত বলে কিছু নেই। যাতায়াতের পথে বাস, লরি, অটো ঘাড়ে এসে পড়তে পারে যে কোনও সময়। কৌশল্যা মোড়, ইন্দা মোড়, গিরিময়দান থেকে জগন্নাথ মন্দির যাওয়ার রাস্তা, কলেজ রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তাতেই এক ছবি। ইন্দা মোড়ে অবৈধ ভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে দোকান। কৌশল্যা থেকে ঝাপেটাপুরে হয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা কিছুদিন আগেই সম্প্রসারিত করেছে পূর্ত দফতর। তখন সব বেআইনি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছিল। অধিকাংশ দোকানিকে বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল স্টল। এখন ফের ওই রাস্তায় নতুন করে বাড়ছে ঝুপড়ি। সাইকেল মেরামতের দোকান থেকে, ফাস্ট ফুড কাউন্টার, সেলুন গজিয়ে উঠেছে রাস্তার ধারে। স্টেশনে যাওয়ার বোগদা রাস্তাকে সংকীর্ণ করে তুলেছে ফল, ইডলি-ধোসা, বইয়ের দোকান। রেল এলাকাভুক্ত গেটবাজার, গোলবাজারে এমন অবৈধ দোকানের অন্ত নেই। |
|
রাস্তার পাশে দোকানের সারি। গিরিময়দান এলাকায়।—নিজস্ব চিত্র। |
সংকীর্ণ পথে যাতায়াত করতে গিয়ে নিত্য দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা খোকন রাউত, ইন্দার সন্দীপ রায়ের বক্তব্য, “যাতায়েতে সমস্যা তো হচ্ছেই। তবে এটাও ঠিক ওঅ সব দোকানিদের পুনর্বাসনের একটা বন্দোবস্ত হওয়া দরকার। রেল ও প্রশাসনের উচিত নজরদারি চালানো যাতে এ ভাবে যত্রতত্র দোকান না গজিয়ে ওঠে।” স্থানীয় সূত্রের খবর, কিছু গরিব দোকানির সঙ্গেই বসে যাচ্ছে বড় ব্যবসায়ীরাও। অনেক ক্ষেত্রে পুনর্বাসন দেওয়া হলেও ফাঁকা জায়গায় বাড়ছে জবরদখল। এতে মদত দিচ্ছে কিছু স্থানীয় নেতা বা প্রভাবশালী লোক। তাই একাধিকবার উচ্ছেদ করেও সমস্যা থাকছে সেই তিমিরেই। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র এ কে শ্যামল বলেন, “আমরা যখনই এ ধরনের খবর পাই প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান করে থাকি। তবে কোথায় কখন কী ভাবে জবরদখল হচ্ছে, তা সব সময় আমাদের নজরে আসে না।” পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র তপন সাহারও বক্তব্য, “আমরা উচ্ছেদ করলেও ফের গজাচ্ছে এ সব দোকান। কর্মীর অভাবে আমরা নজরদারি চালাতে পারি না। অনেক ক্ষেত্রে উচ্ছেদ করতে গিয়েও নানা বাধা আসে।” সমস্যার কথা অজানা নয় মহকুমাশাসক আর বিমলার। তিনি বলেন, “এই সব দোকানের জন্য যানজট বাড়ছে এটা ঠিক। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যদি প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করেন তবে সব সম্ভব। আমাকে পূর্ত ও রেল এ বিষয়ে জানালে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব।”
আশ্বাসেই কি সব থমকে থাকবে, নাকি সত্যিই পরিস্থিতি পাল্টাবে? প্রশ্ন রেলশহরের বাসিন্দাদের। |
|
|
|
|
|