নজর এড়িয়ে কী ভাবে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা, প্রশ্ন
চা বাগান-জঙ্গলে স্কুটি নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ২৮ বছর বয়সী তরুণী মেনকা রায়ের গতিবিধির উপরে প্রায় আট মাস ধরে নজরদারি করছিল পুলিশ। অথচ বানারহাটের অঙ্গনওয়ারি কর্মী সেই মেনকার মাধ্যমেই আলিপুরদুয়ারে বিস্ফোরণ ঘটানোর সরঞ্জাম কেনার টাকা জোগাড় হয়েছিল বলে এখন দাবি করছে পুলিশ। ধৃত মেনকা ও তাঁর সঙ্গী গৌরাঙ্গ রায়কে জেরার পরে পুলিশের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে। ধৃতদের মোবাইলের একাধিক সিম কার্ড, কল-রেকর্ড খতিয়ে দেখার পরে বেশ কিছু সূত্রও পুলিশ পেয়েছে।
কিন্তু, নজরদারি করা সত্ত্বেও কী ভাবে মেনকা অনায়াসে নাশকতার জন্য বোমা জোগাড় করলেন ও তা রাখতে পারলেন তা নিয়ে পুলিশের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একাংশের ঢিলেঢালা আচরণের ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে কি না সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছেন সরকারি কর্তাদের অনেকে। যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, নজরদারি ছিল বলেই বোমাটি চৌপথী থেকে উদ্ধার হয়। নিষ্ক্রিয় করার সময়ে তা ফেটে দুর্ভাগ্যবশত একজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু বলে পুলিশ কর্তাদের দাবি। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “এখনও পর্যন্ত তদন্তে যে সব তথ্য ও সূত্র মিলেছে তা আলিপুরদুয়ারের বোমাটি রাখার ব্যাপারে মেনকা রায় ও গৌরাঙ্গ রায় যুক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। যত দূর জানা গিয়েছে, বোমা কেনার জন্য কয়েক দফায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা মেনকা ও গৌরাঙ্গ মিলে যোগাড় করে। ওই ঘটনায় আর কারও জড়িত রয়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে।”
গত ২৯ অগস্ট আলিপুরদুয়ারে বোমা উদ্ধারের পরে তা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ফেটে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে ময়নাগুড়ি থেকে গৌরাঙ্গ নামে এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। রাতেই গ্রেফতার হন মেনকা। যিনি ফেরার কেএলও জঙ্গি টম অধিকারী তথা জয়দেব রায়ের প্রেমিকা বলে পুলিশের সন্দেহ। ধৃতদের জেরা করে পুলিশের দাবি, মেনকার মাধ্যমেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে সঙ্গীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন একদা আত্মসর্মপণকারী কেএলও সদস্য টম। আলিপুরদুয়ার চৌপথীতে বোমা রাখতে অসম থেকে কয়েকজন কেএলও সদস্য সপ্তাহখানেক আগে ডুয়ার্সে আসে বলে পুলিশ জেনেছে। দলটি এসে প্রথমে মেনকার সঙ্গেই যোগাযোগ করে। তার পরে মেনকা ময়নাগুড়িতে গৌরাঙ্গ রায়ের বাড়িতে যায়। ওই দু’জনই বহিরাগত জঙ্গিদের কোথায় বোমা রাখা হবে, কখন রাখা হবে তা দেখিয়ে দেয় বলেও পুলিশের সন্দেহ। যদিও দলে কারা রয়েছে, কোথা থেকে বোমা সংগ্রহ করেছে সে সম্পর্কে তথ্য এখনও পুলিশ পায়নি।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, মেনকা ও গৌরাঙ্গ মিলে একাধিক সিমকার্ড বাইরে থেকে আসা জঙ্গিদের হাতে তুলে দেয়। তবে কেএলওর কমান্ডার-ইন-চিফ নামে পরিচয় দিয়ে শ্যাম রায় প্রেস বিবৃতি জারি করে গত ২৮ অগস্ট বন্ধ এবং কালা দিবস পালনের ডাক দেন। কিন্তু, সে দিন পুলিশের কড়াকড়ি কেএলও ছক কষে পরদিন, ২৯ অগস্ট বিস্ফোরণ হবে। সেই মতো গত ২৮ অগস্টের কয়েকদিন আগে শ্যাম ময়নাগুড়িতে গৌরাঙ্গের বাড়িয়ে গিয়ে নাশকতার ছক চূড়ান্ত করেন বলে পুলিশের দাবি।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.