আলিপুরদুয়ারের বিস্ফোরণে হাত
রয়েছে টমের, নিশ্চিত গোয়েন্দারা
বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার সময়ে যে সাধারণ নিয়ম বা ‘স্ট্যার্ন্ডাড অপারেটিং প্রসিডিওর’ মেনে চলা প্রয়োজন শিলিগুড়ি থেকে আসা বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্মীরা সে সবের তোয়াক্কা করেননি। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারে এসে প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনই দাবি সিআইডির কর্তাদের।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডে একটা করে সুরক্ষা পোশাক রয়েছে। শিলিগুড়িতেও তা থাকার কথা। বৃহস্পতিবার, সেটি কেন ব্যবহার করা হল না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি কর্তারা। শুক্রবার আইজি (সিআইডি-১) জগমোহনের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল তা এখনও পরিষ্কার নয় গোয়েন্দাদের কাছে। তাঁরা খোঁজ করছেন একটি টাইমার ঘড়িরও। বিস্ফোরকের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে না পারলেও বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে যে আত্মসর্মপণকারী কেএলও সদস্য টম অধিকারী জড়িত, সে ব্যাপারে গোয়েন্দারা একরকম নিশ্চিত।
ধৃত মেনকা রায় ও গৌরাঙ্গ রায়। ছবি: নারায়ণ দে।
২০০৩ সালে ভুটানে সেনা অভিযানের সময় আত্মসর্মপণ করেছিলেন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের ‘ডেপুটি চিফ’ টম। ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়ার পরেই তিনি অবশ্য গা ঢাকা দেন। বাংলাদেশ ঘুরে আপাতত তিনি নেপালের ঝাপা জেলার এক গ্রামে বাড়ি ভাড়া করে রয়েছেন বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। কেএলওর ‘কমান্ডার ইন চিফের’ দায়িত্ব বকলমে তিনিই সামলাচ্ছেন বলে অনুমান। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ই-মেল মারফত কেএলও যে বিবৃতি পাঠায় তাতে কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে ‘শ্যাম রায়’ নামে যাঁর নামোল্লেখ থাকে আদপে তিনিই টম বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে কেএলও-র শীর্ষ নেতা জীবন সিংহেরও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ।
টমের ঘনিষ্ঠ মেনকা রায় নামে এক মহিলাকেও বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ময়নাগুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে গৌরাঙ্গ রায় নামে এক যুবককেও। ওই দু’জনের সঙ্গে টম অধিকারী গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছিলেন বলে পুলিশের দাবি। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বোমা উদ্ধারের পর থেকে বিস্ফোরণের পরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ওই দু’জনের মোবাইলে অন্তত বার দশেক ফোন করেন টম। ধৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইলের সিম কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গোয়েন্দাদের দাবি, বিস্ফোরণের পরে, সন্দেহভাজন কয়েকজনের মোবাইল কল রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখা যায় ময়নাগুড়ির গৌরাঙ্গ রায় এবং টম-ঘনিষ্ঠ মেনকার মোবাইল নম্বর থেকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হয়। সেই মতো গৌরাঙ্গ এবং মেনকার মোবাইলে পাল্টা পরীক্ষা করে জানা যায়, দু’জনের নম্বরেই একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকে মিনিট কুড়ি অন্তর ফোন এসেছে। সেই নম্বরটি যে টমের সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে।
শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিন আদালতে তোলা হলে মেনকা রায় বিচারকের কাছে অভিযোগ করেন, পুলিশ তাকে সাদা কাগজে জোর করে সই করিয়ে নিয়েছে। তাঁর কাছে একটি মোবাইল ছাড়া আর কিছুই ছিল না। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি অবশ্য বলেন, “আলিপুরদুয়ার কাণ্ডে ধৃতদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। কেএলও জঙ্গি টম অধিকারীই এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, আমরা নিশ্চিত।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.