শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত শহরের নানা এলাকার অন্তত ৬০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শহরে বিভিন্ন এলাকায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। সব চেয়ে বেশি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ এবং ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ৪, ৭, ৩২, ৩৩ , ৩৬ নম্বর সহ পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “শনিবার সকাল পর্যন্ত আমার কাছে যা খবর রয়েছে, তাতে শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় মোট ৬০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন, শিলিগুড়ি হাসপাতালে ১৬ জন এবং নার্সিংহোমগুলি মিলিয়ে ২৩ জন ভর্তি রয়েছে।” |
সে জন্য মহকুমা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে অ্যাকশন কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। প্রায় দেড় ঘন্টার বৈঠকের পর ঠিক হয় ডেঙ্গুর প্রতিরোধ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে প্রচারের উপরেই জোর দেবেন তাঁরা। পাশাপাশি, শিলিগুড়ি পুরসভার ভূমিকায় ফের ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। পুরসভাকে পর্যাপ্ত টাকা দেওয়া সত্বেও তাঁরা কোনও কাজ করছেন না বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী। যদিও মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “আমরা ডেঙ্গি প্রতিরোধে সবরকম কাজ করছি। ওয়ার্ডগুলিতে ক্যাম্পও হচ্ছে। অভিযোগ ঠিক নয়।”
এদিন শিলিগুড়ির ১৭ টি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে বৈঠকে ডাকা হলেও সকলে যাননি। যে ৬ টি নার্সিংহোমের কোনও প্রতিনিধি যাননি, তাঁদের ‘শো-কজ’ নোটিশ জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ডেঙ্গি রুখতে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি, সেখানে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আমরা অ্যাকশন কমিটি পর্যন্ত তৈরি করে কিভাবে ডেঙ্গির মোকাবিলা করা যায় তার রাস্তা খুঁজছি। সেখানে যাঁরা আসেননি তাঁদের জবাবিদিহি করতে হবে।”
তবে পুরসভায় দীর্ঘ দিন ধরে বোর্ড মিটিং হচ্ছে না। ফলে, প্রায় সব উন্নয়ন মূলক কাজ করাতে প্রতি পদে বাধা পাচ্ছে পুরবোর্ড। এদিন পুরসভার বোর্ড মিটিং হলেও তাতে যোগ দেননি কংগ্রেস ও বামেরা। ফলে, তৃণমূলের ১৪ জন কাউন্সিলর উপস্থিত হলেও কোরামের অভাবে বোর্ড মিটিং হয়নি। যা শোনার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, “এই পরিস্থিতি মেনে নেওয়া যাবে না। পুর দফতরকে জানানো হয়েছে। নাগরিক পরিষেবা সচল রাখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে বাম কাউন্সিলরদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নান্টু পাল অবৈধ ভাবে চেয়ারম্যান পদে বসেছেন বলে অভিযোগ থাকায় তাঁর ডাকা বোর্ড মিটিঙে তাঁরা যোগ দেবেন না। পাশাপাশি, পুরসভাকে যে ১৬টি কাজে টাকা খরচের নির্দেশিকা রাজ্য সরকার দিয়েছে তার প্রতিলিপি জ্বালিয়ে প্রতিবাদও করেন বামেরা। বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “শহরে অচলাবস্থা, কিন্তু রাজ্য সরকারের ওই নির্দেশিকার জন্য পুরসভা তা করতে পারছে না। সেটা প্রত্যাহারের দাবি করছি।” |