মেডিক্যাল কলেজ
জুনিয়র ডাক্তাররা মেরেছে, অভিযোগে কাজ বন্ধ কর্মীদের
রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের হাতে হেনস্থা হওয়ার অভিযোগ তুলে সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি বা বিক্ষোভ-ধর্না, নতুন কিছু নয়। অনেক সময় হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগেও কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা শোনা যায়। এ বার সেই জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধেই মারধরের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা। হাসপাতালের কাজকর্ম বন্ধ করে দিলেন তাঁরা। ঘটনাস্থল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
অভিযোগ আরও অনেক। বিক্ষোভরত কর্মীদের কয়েক জন জানালেন, তাঁরা মদ্যপ অবস্থায় ডিউটি করছেন কি না পরীক্ষা করে দেখার নাম করে, জোর করে রক্ত নিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ঘটনার তদন্তে ৯ সদস্যের কমিটি তৈরি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রের খবর, গণ্ডগোলের সূত্রপাত শুক্রবার গভীর রাতে। হাসপাতালের ইডেন ভবনে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে প্রসব-পরবর্তী অবসাদ দেখা দিয়েছিল এক মহিলার। তাই শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই বিভাগ থেকে এজরা ভবনের মানসিক রোগ বিভাগে ‘কলবুক’ পাঠিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়। কলবুক নিয়ে যান জয়দেব মণ্ডল ও রামসুরত রাম নামে দুই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। এজরা ভবনে তাঁদের দরজা খুলে দেন আশিস মুখোপাধ্যায় নামে আর এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
আহত চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রাম সুরত রাম। —নিজস্ব চিত্র
অভিযোগ, ভবনের ‘ডক্টরস ডিউটি রুম’-এর বাইরে দাঁড়িয়ে ওই তিন কর্মী সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে ডাকাডাকি করলে এক জন মহিলা জুনিয়র ডাক্তার দরজার অর্ধেকটা ফাঁক করে জানিয়ে দেন কলবুকে সই করে ওই ওয়ার্ডে যাওয়ার কথা রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও)-এর। তাঁকে আশপাশে দেখা যাচ্ছে না। তাই তিনি ওই কলবুক-এ সই করবেন না।
জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, মহিলা ডাক্তারের ওই কথা শোনার পরেই তিন কর্মী অশ্রাব্য গালিগালাজ করে দরজা ধাক্কাতে শুরু করেন। এতে ভয় পেয়ে ওই মহিলা ডাক্তার লেবার রুমে কর্মরত তাঁর সহকর্মীদের ফোন করে ডাকেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের পাল্টা অভিযোগ, কোনও গালাগাল বা ধাক্কাধাক্কির ঘটনাই ঘটেনি। বরং মারধর করা হয়েছে তাঁদের সহকর্মীকে। হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে রামসুরত রাম বললেন, “ওই চিকিৎসককে দরজা খুলে বাইরে এসে কলবুকে সই করতে বলতেই, তিনি সহকর্মীদের ডেকে আনেন। তাঁরা এলোপাথারি আমাদের মারতে থাকেন। মারের চোটে পড়ে গিয়ে আমার মাথা ফেটে যায়। এর পরেও তাঁরা থামেন না। উল্টে মদ্যপ কি না পরীক্ষা করে দেখার নাম করে, ওই অবস্থায় আমাদের শরীরে সিরিঞ্জ ফুটিয়ে জোর করে রক্ত টেনে নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে দেন। তার পর আমাদের টেনেহিঁচড়ে বৌবাজার থানায় নিয়ে যান।”
ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১০টায় কাজ বন্ধ করে হাসপাতালের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে ধর্নায় বসেন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীরা। দফায়-দফায় বৈঠকের শেষে ঘণ্টা দেড়েক পরে কর্মবিরতি তুলে নেন তাঁরা। অধ্যক্ষ তপনকুমার লাহিড়ি জানান, ঘটনার তদন্তে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার চেয়ারম্যান হয়েছেন ত্বক বিভাগের প্রধান দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক্তারদের পাশাপাশি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও ওই কমিটিতে রাখা হয়েছে। তাঁর কথায়, “ওই কর্মীদের দেহ থেকে রক্ত টানা হয়েছে কি না আমরা দেখছি। কেন ডিউটিরত জুনিয়ার ডাক্তার কলবুক এসেছে শুনেও দরজা খুলে বাইরে আসেননি, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.