১১ দিনের লুকোচুরি শেষ। নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের দায়ে অবশেষে গ্রেফতার হলেন আশারাম বাপু। শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে তাঁর ইনদওরের আশ্রম থেকে গ্রেফতার করে জোধপুর পুলিশ। আজই সকালে ওই আশ্রমের সামনেই দুই সাংবাদিকের উপরে চড়াও হন আশারামের কিছু মহিলা সমর্থক। সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর করে ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়।
জেরার জন্য হাজির হতে আশারামকে শুক্রবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিল জোধপুর পুলিশ। কিন্তু, নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন আশারাম। আজ বিকেলের দিকে ইনদওরের আশ্রমে পৌঁছে যায় জোধপুর পুলিশের একটি দল। সেখানে প্রায় আট ঘণ্টা ঘাঁটি গেড়ে থাকে তারা। ইতিমধ্যে আশারামের মেডিক্যাল রিপোর্টও পুলিশের হাতে আসে, যাতে বলা হয়, জেরা করার করার মতো সুস্থই আছেন ধর্মগুরু। এর পর মাঝরাতে আশ্রমের ভিতর থেকে পুলিশের দু’টি সাদা গাড়িকে পরপর বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। আশপাশে ভিড় করা আশারাম-অনুগামীরা তখন পুলিশ-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। আশারামকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে ইনদওরের এসপি কিছু বলতে চাননি। একটি সূত্রের দাবি, আশ্রম থেকে সোজা বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে আশারামকে জোধপুরেই নিয়ে যাওয়ার কথা, যেহেতু যৌন নিগ্রহের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর জোধপুরেই দায়ের করা হয়েছিল।
আশারাম গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত আজ সারা দিনের জল্পনা ছিল, তিনি রয়েছেন কোথায়? গুজরাত হাইকোর্টে তাঁর আগাম জামিনের আর্জি খারিজ হওয়ার পর শুক্রবার ভোপাল থেকে নয়াদিল্লির বিমান ধরতে গিয়েছিলেন আশারাম। ঘনিষ্ঠদের দাবি, তখন জোধপুরেই যাচ্ছিলেন তিনি, কিন্তু সমর্থকদের ভিড়ের চাপে আর বিমান ধরা হয়নি। তার পরেই কার্যত উধাও হয়ে যান তিনি। সকালের গণ্ডগোলের পর দুপুরের দিকে ইনদওরের আশ্রমে দু’টি এসইউভি-কে ঢুকতে দেখা যায়। আশারাম এসেছেন বলে জল্পনা ছড়ায় তখনই। পরে আশ্রমের গেটে আসেন তাঁর ছেলে নারায়ণ সাই ও কৌঁসুলি পুশ্যকরণ ভাণ্ডারী। তাঁরা জানান, আশারাম ওই আশ্রমেই আছেন। তিনি অসুস্থ। তাই জোধপুরে গিয়ে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। জোধপুর পুলিশ চাইলে ইনদওরের আশ্রমে জেরা করতেই পারে। আশারাম কোনও দিন আইনকে এড়িয়ে চলেননি।
আশারামের গ্রেফতারের সম্ভাবনার কথা শুনেই সারা দেশের আশ্রমগুলিতে জড়ো হতে শুরু করেছিলেন অনুগামীরা। পুলিশি ঘেরাটোপ ছিলই। আশারাম নিজেও তাঁদের শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছিলেন বলে খবর। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত এড়াতে পারলেন না তিনি নিজেই।
|