উত্তরপ্রদেশ
১৩ বছরেই স্নাতকোত্তরে, বিরল নজির কিশোরীর
বিস্ময়ের ঘোর যেন কিছুতেই কাটছে না লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। এ-ও কী সম্ভব? মাত্র তেরো বছর বয়সী এক কিশোরী কি না সহপাঠিনী হতে চলেছে তাঁদের। অথচ বিশ্বাস না করে উপায় নেই। মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে স্নাতকোত্তরে যে সব পড়ুয়া ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন, তার মধ্যে জ্বলজ্বল করছে সেই কিশোরীর নাম, সুষমা বর্মা।
কে এই সুষমা বর্মা? তথ্য বলছে, মাত্র ৯ বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বিরল নজির গড়েছেন উত্তরপ্রদেশের এই কিশোরী। সম্প্রতি স্নাতক স্তরের পঠনপাঠন শেষ করেছেন তিনি। এ বার গন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়। মেধার নিরিখে যেখানে নিজের জায়গা করেও নিয়েছেন তিনি। চিন্তা একটাই। মেয়ের পঠনপাঠনের খরচ জোগাতে
সুষমা বর্মা
জমি বেচে ২৫০০০ টাকা জমা দিতে পেরেছেন সুষমার বাবা। কিন্তু বাকি ৭৫০০০ টাকা কোথা থেকে আসবে সে চিন্তাই ঘুম কেড়েছে কৃতী কিশোরীর বাবার।
আসলে কোনও উচ্চবিত্ত পরিবারের ‘সবেধন নীলমণি’ নন সুষমা। সে অর্থে নেই কোনও পারিবারিক কৌলিন্যের ইতিহাসও। উত্তরপ্রদেশের নেহাতই এক দিনমজুর বাবার কিশোরী-কন্যা তিনি। বাবার দৈনিক গড় আয় ২০০ টাকা। অথচ পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচ। থাকার জায়গা বলতে ভগ্নপ্রায় একচিলতে ঘর। ঘরের সর্বত্র দারিদ্রের চিহ্ন স্পষ্ট। তবে সেই ঘরেই অমূল্য সম্পদ বলতে একটি পড়ার টেবিল আর সেকেন্ড হ্যান্ড কম্পিউটার। সুষমার বাবা তেজ বাহাদুর বর্মার বয়ানে, “আমার সন্তানদের জন্য শিক্ষা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।....আমরা কোনও দিন লেখাপড়ার সুযোগ পাইনি কিন্তু আমি চাই না আমার সন্তানরাও মজুরের কাজ করুক। ওদের শিক্ষিত করতে যা করার করব।” যেমন বলা তেমনি কাজ। একমাত্র সম্বল জমিটি বেচে ২৫০০০ টাকা জমা দিয়েছেন তিনি। তবে বাকি টাকাটা কোথা থেকে আনবেন, ভেবে কূল পারছেন না। বাঁচোয়া একটাই। বাকি টাকাটা এখনই দিতে হবে না। সুষমার লক্ষ্য, চিকিৎসক হওয়া। পরীক্ষাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বাদ সেধেছে তাঁর বয়স। এ বার তাই অপেক্ষা ১৮ পেরোনোর। ফের এক বার পরীক্ষায় বসবেন তিনি।
তবে প্রতিকূলতা যে শুধু দারিদ্র বা বয়স, তা নয়। কলেজের প্রথম দিকে কিছু দিন ছোটখাটো এই ছাত্রীটিকে মেনে নিতে বেশ অসুবিধা হয়েছিল তাঁর সহপাঠী দাদা-দিদিদের। দেখতে শুনতে স্কুলছাত্রীর বেশি লাগে না এখনও। তিনিই বসবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে। বয়সে বেশ অনেকটা বড় পড়ুয়াদের সঙ্গে। শেষের দিকে কলেজের সহপাঠীরা আপন করে নেয় তাঁকে। এ বারও সেরকম কিছুই হবে, বিশ্বাস সুষমার পরিবারের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.