স্নাতক স্তরে ভর্তির দাবিতে আবেদনকারী পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে উত্তেজনা ছড়াল রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে। বৃহস্পতিবার বিকালে রায়গঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন এলাকার ৬০ জন পড়ুয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তম রায়ের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। নিজের ঘরে আটকে পড়ে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ উত্তমবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশের সহযোগিতায় কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দিলে পুলিশই তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। রাত ১টা নাগাদ চম্পা মাহাতো, কাজলি রায় ও দীপক সরকার নামে আন্দোলনকারী তিন অসুস্থ হন। পুলিশ তাঁদেরকেও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশের আশ্বাসে রাত তিনটে নাগাদ বাকি পড়ুয়ারা অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নিলেও শুক্রবার সকাল থেকে ফের উত্তমবাবুর ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন তাঁরা! উত্তমবাবু অসুস্থ থাকায় তিনি এদিন কলেজে যাননি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছে। এদিন বিকাল ৪টা নাগাদ প্রশাসনিক কর্তাদের আশ্বাসে সাময়িকভাবে অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেন পড়ুয়ারা। গত ২১ অগস্ট ওই পড়ুয়ারা ভর্তির দাবিতে একইভাবে কলেজে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিল। ২২ অগস্ট তাঁরা রায়গঞ্জের মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে লিখিতভাবে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে ভর্তির দাবিও জানান। তাঁদের অভিযোগ, মহকুমাশাসক তাঁদের ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কিছু হয়নি। মহকুমাশাসক নন্দিনী সরস্বতী বলেন, “আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে ভর্তি হতে চাইছেন। কিন্তু ওই কলেজে আসন নেই। তাই তাঁদেরকে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ ও ইটাহারের বিভিন্ন কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের অনুরোধ সত্বেও তাঁরা সেইসব কলেজগুলিতে ভর্তি হতে চাইছেন না।” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তমবাবু জানান, আবেদনকারী পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবছর নির্দিষ্ট আসনের বাইরেও অতিরিক্ত কয়েকশো পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। আর কাউকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়।
কলেজ সূত্রের খবর, স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ও পাশকোর্সে প্রায় দুমাস ভর্তি প্রক্রিয়া চলার পর গত ৮ জুন তা শেষ হয়েছে! কলেজে অনার্স ও পাশকোর্স মিলিয়ে কলেজে দুহাজার আসন থাকলেও ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আন্দোলনের জেরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই প্রায় ২৮০০ পড়ুয়াকে ভর্তি নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই প্রসঙ্গে জেলা ছাত্র পরিষদ নেতা নব্যেন্দু ঘোষ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অজয় সরকার পৃথক ভাবে বলেন, “আমরাও আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের বদলে জেলার অন্য কলেজগুলিতে ভর্তি হয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।” আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা এ দিন জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের বদলে আমরা অন্য কোনও কলেজে ভর্তি হব না। আমরা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কোনও কলেজে ভর্তি হতে চাই না।
|