টাকা ফেরৎ দেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ফালাকাটা বিএড কলেজের পরিচালন সভাপতির বাড়ির সামনে রিলে অনশন তুলে নিল ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার ফালাকাটার বিডিও দফতরে পড়ুয়া, সভাপতি-সহ এলাকার জন প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে পরীক্ষায় বসতে না পারা ছাত্রছাত্রীরা সুদ সমেত টাকা ফেরৎ চান। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত আলোচনা হওয়ার পর কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি বিজন পাল লিখিত ভাবে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের থেকে আদায় করা প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ফেরৎ দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তার পরে তাঁর বাড়ির সামনে থেকে অনশন প্রত্যাহার করে নেন পড়ুয়ারা। ফালাকাটা বিডিও কৃষ্ণকান্ত ঘোষ বলেন, “বিএডের ফি হিসাবে আদায় করা প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ফেরৎ দেবেন বলে বিজনবাবু লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তিনি সাত দিনের সময় চেয়েছেন। ছাত্রছাত্রীরা তা মেনে নিয়েছেন।” বিজনবাবু টাকা ফেরৎ নিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতির বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর কথায়, “বিষয়টি বিচারাধীন। যাঁদের ভর্তি করিয়েছি তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা না হলে যা শাস্তি দেওয়ার তা হাইকোর্ট দেবে। বিডিও ডাকায় তাই গিয়েছিলাম। এর বাইরে কিছু বলব না।”
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে পড়ুয়াদের ভর্তি নিয়ে তাঁদের বিভিন্ন কলেজে ভর্তির নির্দেশ দিলেও গত বছর ফালাকাটা বিএড কলেজে কতৃর্পক্ষ কোন ছাত্রছাত্রীকে সেখানে পাঠায়নি। আলাদাভাবে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে ১০০ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়। পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সারা বছর ক্লাস করার পর পরীক্ষার আগে হাতে অ্যাডমিট কার্ড না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যান পড়ুয়ারা। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনুমোদন বাতিল করে চিঠি পাঠায়। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, গত ৫ অগস্ট পরীক্ষার ১০ দিন আগে পর্যন্ত কলেজের সভাপতি বিজনবাবু পরীক্ষায় বসা নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দেন। হাইকোর্টের মাধ্যমে সকলের পরীক্ষার ব্যবস্থা করার কথাও বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হওয়ার পর কলেজে বিক্ষোভ শুরু হয়। পড়ুয়ারা সুদ সমেত কোর্স ফি’র টাকা ফেরতের দাবিতে গত শনিবার থেকে বিজনবাবুর ফালাকাটার মুক্তিপাড়ার বাড়ির সামনে পালা করে রিলে অনশন শুরু করেন। সেই দিনই বিজনবাবু জানিয়ে দেন, বৃহস্পতিবার দিন কলকাতা থেকে ফালাকাটায় ফিরে তিনি আলোচনায় বসবেন।
আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা এ দিন জানান, এক বছর সময় নষ্ট হয়ে গেল। এখন সুদ-সহ টাকা পেলে বাঁচা যায়। নইলে অনেকেই সমস্যা পড়বেন।
|