গন্তব্য নতুন মহাকরণ, ফেরিঘাট সংস্কারে উদ্যোগী রাজ্য সরকার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নতুন মহাকরণে সহজে পৌঁছতে জলপথ আরও বেশি ব্যবহার হবে বলে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু শিবপুর-সহ অন্য ফেরিঘাটগুলি যে বড় লঞ্চ চলাচলের উপযুক্ত নয় এবং অধিকাংশের পরিকাঠামো যে প্রাচীন এবং দুর্বল তা প্রকাশ্যে আসায় সেগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হল রাজ্য। পাশাপাশি, সড়ক পথে কী ভাবে নতুন মহাকরণে দ্রুত যাওয়া যাবে তা নিয়েও ভাবছে পরিবহণ দফতর।
বৃহস্পতিবারই এ নিয়ে ‘হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি’র সঙ্গে বৈঠক করেন হাওড়া জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বৈঠকে সমিতির তরফে কলকাতা-হাওড়া যাতায়াতে হুগলি নদীতে রাজ্য ভূতল পরিবহণ সংস্থার ৯টি গুরুত্বপূর্ণ পন্টুন বা জেটি ও তার গ্যাংওয়ের সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ের খসড়াও পেশ হয়েছে।
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ শুক্রবার রাজ্য পরিবহণ দফতরের সচিবালয়ে বৈঠক ডেকেছেন পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও ওই হিসেব পেশ হবে। বৈঠকে থাকবেন হাওড়ার জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাশ এবং পরিবহণ দফতর, রাজ্য ভূতল পরিবহণ, হুগলি নদী জলপথ সমবায় সমিতি, হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স ও পূর্ত দফতর-সহ অন্যান্য দফতরের কর্তারা।
বৃহস্পতিবার হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) চৈতালি চক্রবর্তী জানান, “জলপথ পরিবহণের পরিকাঠামো নিয়ে প্রাথমিক আলোচনায় ফেরিঘাট সংস্কারের খরচ-সহ রিপোর্ট জমা দিয়েছে ‘হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি’।” সমিতি সূত্রে খবর, কলকাতা-হাওড়া জলপথ পরিবহণে শিবপুর, মেটিয়াবুরুজ, চাঁদপাল ১ নম্বর জেটি, নাজিরগঞ্জ, ফেয়ারলি, আর্মেনিয়ান, হাওড়া ২ নম্বর জেটি, শোভাবাজার ও বাগবাজার জেটি ও গ্যাংওয়ে ব্যবহার হয়। সমিতির রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতার দিকের চাঁদপাল জেটির গ্যাংওয়ে এতটাই ছোট যে ভাটার সময় সেটি মাটিতে বসে যায়। তাই বড় গ্যাংওয়ে প্রয়োজন। শিবপুর ফেরিঘাটেরও জেটি এত ছোট ও পুরনো যে বড় লঞ্চ ভেড়ানো যাবে না। মেরামতের প্রয়োজন গ্যাংওয়েরও। জেটি বাঁধার নোঙড় ও লোহার শিকলগুলিও পাল্টানো দরকার।
সমিতির চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বলেন, “নতুন মহাকরণে পৌঁছতে প্রধান ফেরিঘাট হবে শিবপুর। সেটির সংস্কার অতি প্রয়োজনীয়।” তাঁর মতে, রামকৃষ্ণপুর ফেরিঘাটের উপরও চাপ বাড়বে। সেখানেও জেটি ও গ্যাংওয়ে মেরামতের প্রয়োজন। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ভূতল পরিবহণ সংস্থার থেকেও জেটি ও গ্যাংওয়ে সারানোর জন্য রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। শুক্রবার দু’টি রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিবপুর ঘাট থেকে অটো বা ফোরশোর রোড থেকে বাস চালানো যায় কি না, তা-ও আলোচনা হবে।
এ দিকে, নতুন তৈরি দু’টি ফেরির জন্যও রাজ্য পরিবহণ দফতরের কাছে বাড়তি ৬৪ লক্ষ টাকা দাবি করেছে সমিতি। ওই দু’টির একটি ‘এম ভি গীতাঞ্জলি’ চলছে মাস দুয়েক ধরে। অন্যটি ‘এম ভি নটরাজ’-এর উদ্বোধন হয় বুধবার। সমিতির দাবি, দু’টি ফেরির বরাত দেওয়া হয়েছিল ৫৭ লক্ষ ৮০০ টাকা দরে। কিন্তু বরাতে দুর্নীতির অভিযোগ করে সমিতি চায় ফেরি-পিছু ৯০ লক্ষ টাকা দেওয়া হোক। এই দাবি মানতে নারাজ পরিবহণ কর্তারা। ফেরি তৈরিতে কেন বাড়তি টাকা দাবি করা হল, আজ শুক্রবারের বৈঠকে তা নিয়েও আলোচনা করবেন তাঁরা।
|