সিরিয়া সঙ্কট
পাল্টা হামলা হবে ইজরায়েলে, হুমকি ইরানের
সিরিয়ায় হামলা চালালে ছেড়ে কথা বলবে না ইরান। আজ আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইরান বলেছে, বদলা নিতে হামলা হবে ইজরায়েলে। এর পাশাপাশি জঙ্গি হামলা এবং সাইবার লড়াইয়ের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
যদিও সিরিয়ায় সম্ভাব্য হামলা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং সহযোগী দেশগুলো। বরং তারা আগের অবস্থান থেকে কিছুটা পিছু হটেছে বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে প্রত্যেকটি দেশই অপেক্ষা করে আছে রাষ্ট্রপুঞ্জের তদন্ত-রিপোর্টের জন্য। তার পরেই সিরিয়ায় সেনা হামলা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সিরিয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের তদন্তকারী দল অবশ্য শনিবার সকালেই সে দেশ ছেড়ে চলে যাবেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন।
ইরাকের উদ্বাস্তু শিবিরে খাবারের অপেক্ষায় সিরিয়াবাসীরা। ছবি: এএফপি।
বহুদিন আগে থেকেই সিরিয়া সরকারের বিশ্বস্ত সহযোগী ইরান। সে দেশের কট্টরপন্থী নেতাদের দাবি, সিরিয়ায় অশান্ত পরিস্থিতির জন্য দায়ী ইজরায়েলই। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় তারা। ইরানের এই হুমকির পরে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু বলেছেন, তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য তৈরি। তিনি বলেন, “সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের শরিক নই আমরা, কিন্তু আমাদের দেশকে আক্রমণ করলে আমরা চুপ করে থাকব না।” হামলা হতে পারে এই আশঙ্কায় আগে থেকেই গ্যাস-মাস্ক সংগ্রহ করে প্রস্তুত হচ্ছে ইজরায়েলের জনতাও।
এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের যেটা আরও ভাবাচ্ছে তা হল, জঙ্গি সংগঠন হিজবুল্লার সঙ্গেও ইরানের যথেষ্ট খাতির। ইরান এবং হিজবুল্লা মিলিত ভাবে আসাদকে সাহায্য করছে। হিজবুল্লা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিতে সাহায্য করে ইরানের সেনাবাহিনী। গত কয়েক মাস ধরে সিরিয়ার বিক্ষোভে আসাদের হয়ে লড়ছে এই প্রশিক্ষিত জঙ্গিদেরই একটা বড় অংশ। ফলে যে কোনও সময় ইরানের শত্রু দেশগুলোতে, বিশেষ করে ইজরায়েলে, বড়সড় জঙ্গি হামলা হতে পারে। ইরানের প্রধান নেতা আয়াতুল্লা আলি খোমেইনি তো বলেই দিয়েছেন, সিরিয়ার অশান্তি সে দেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে বহুদূর গড়াবে। ইরান আর হিজবুল্লার পাশাপাশি রাশিয়ার সমর্থনও পাচ্ছেন আসাদ। সব মিলিয়ে তাই আত্মবিশ্বাসী সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলছেন, যা-ই ঘটুক না কেন, তাদেরই জয় নিশ্চিত।
তবে এ দিনও আমেরিকা জানিয়েছে, এখনই সরাসরি সংঘাতের পথে যাওয়ার কথা ভাবছে না তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “এ নিয়ে হয়তো কারওরই দ্বিমত নেই যে সিরিয়ায় অসংখ্য সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলার জন্য রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছিল। আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি ঠিকই, কিন্তু রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিয়মের কথা মাথায় রাখতে হবে।”
সুতরাং সিরিয়ায় সেনা হামলার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। আমেরিকা বা ব্রিটেন দুই দেশই জানিয়েছে, হামলা চালানোর ক্ষেত্রে স্থায়ী দুই সদস্য রাশিয়া এবং চিন বিরোধিতা করলেও রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করবে না তারা। ব্রিটেনের গোয়েন্দা সূত্রে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকেও জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহে গণ হত্যার পিছনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে দায়ী সিরিয়ার সরকারই। মনে করা হচ্ছে, সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা না করে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত সেনা তৎপরতার দিকে যেতে পারে পশ্চিমী দেশগুলো।
ফলে সিরিয়াবাসীদের মনে আশঙ্কা ছড়াচ্ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় নিজের দেশ ছেড়ে লেবাননে পাড়ি দিয়েছেন ৬ হাজার মানুষ। গত কাল দেশ ছাড়েন আরও ৪ হাজার নাগরিক।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.