আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, সুসম্পর্ক চায় দিল্লি
ত মাসে নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে ভুটানে। কিন্তু তার কয়েক মাস আগে থেকেই বন্ধুভাবাপন্ন এই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়েছে। নানা বিষয় নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ঠোকাঠুকি লেগেই রয়েছে। বিক্ষুব্ধ প্রতিবেশী বলয়ের মাঝে নতুন করে শত্রু বাড়ুক কোনও ভাবেই কাম্য নয় বিদেশ মন্ত্রকের কাছে। তিক্ততা
শেরিং তবগে
সরিয়ে রেখে তাই সম্পর্ক মেরামতে তৎপর হয়েছে নয়াদিল্লি। আগামী কাল শীর্ষ স্তরে সেই কাজ শুরু করা হচ্ছে।
ভুটানের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেরিং তবগে ছ’দিনের সফরে আগামী কাল ভারতে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ছাড়াও মন্ত্রিসভার বেশ কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন তিনি। দিল্লির বিভিন্ন কর্মসূচি ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক পরিদর্শন ও বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে হায়দরাবাদেও যাবেন তবগে।
সম্পর্ক মেরামতের জন্য গত সপ্তাহেই থিম্পু গিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন এবং বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ। দু’দেশের কৌশলগত সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে ভুটানের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে এসেছেন তাঁরা। ভারত-ভুটান আসন্ন শীর্ষ বৈঠকের ভিতও তৈরি হয় ওই সফরে।
উত্তরর্পূাঞ্চলের ঠিক মাথায় চিন-সীমান্ত সংলগ্ন ভুটান অবস্থানগত দিক দিয়ে এ দেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা সরকারের কড়া সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের মাটি থেকে আলফার প্রায় সব ঘাঁটি উচ্ছেদ হয়েছে। তার পরে আলফার এক দল নেতা ধরা পড়ে দিল্লির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। কিন্তু পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন এই উগ্রপন্থী দলটির অন্য অংশ নাশকতার পথ ছাড়েনি। এর আগে ২০০৩-২০০৪-এ ভারত ও ভুটানের সেনারা ভুটানের জঙ্গলে যৌথ অভিযান চালিয়ে আলফার সব ঘাঁটি ভেঙে দেয়। সম্প্রতি ভুটানের জঙ্গলে আলফা ফের কিছু তৎপরতা শুরু করেছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে খবর এসেছে। উত্তরবঙ্গ ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের কিছু জঙ্গি সংগঠনকেও প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে ফের চাঙ্গা করে তোলার কৌশল নিয়েছে আলফা। উত্তরবঙ্গে ফের সক্রিয় কেএলও। আজই আলিপুরদুয়ারে সন্দেহভাজন কেএলও-র পেতে রাখা একটি বোমা বিস্ফোরণে বম্ব স্কোয়াডের এক পুলিশ মারা গিয়েছেন। তার পরই ভুটানের সঙ্গে সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। ভুটানে আলফা বা কেএলও-র মতো জঙ্গিরা যাতে না ঘাঁটি গাড়তে পারে, সে জন্যও ওই দেশের নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা ভারতের পক্ষে জরুরি।
নয়াদিল্লির নীতিগত একটি সিদ্ধান্তে সম্প্রতি একটি অভূতপূর্ব পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল মাস দুয়েক আগে ভোটের মুখে দাঁড়ানো ছোট্ট পাহাড়ি দেশ ভুটানে। সে দেশের কেরোসিন এবং রান্নার গ্যাস থেকে ভারত ভর্তুকি তুলে নেওয়ায় থিম্পুতে আগুন জ্বলে গিয়েছিল। ভারত-বিরোধী প্রচার চূড়ান্ত আকার নেয়। হয় ধর্মঘটও। ৩০জুন সে দেশের দশম যোজনা পরিকল্পনার মেয়াদ শেষ হয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাদের অধীনেই একাদশ যোজনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু মাঝের সেই পনেরো দিনের জন্য কোনও বাজেটই তৈরি হয়নি রাজতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে সদ্য পা রাখা ভুটানে। আটকে যায় ভারতের দেওয়া ভর্তুকিও। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, বিষয়টি নেহাৎই টেকনিক্যাল। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা নিরর্থক।
কিন্তু সম্প্রতি মন্ত্রকেরই একটি গোপন নোট প্রকাশ্যে চলে আসায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। গত ১৬ জুন বিদেশ মন্ত্রকের নর্দান ডিভিশনের লেখা সেই নোটে স্পষ্ট যে ভুটানের সাম্প্রতিক আচরণে খুশি নয় নয়াদিল্লি। অভিযোগ, ভারতকে অন্ধকারে রেখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত-আলোচনা চালাচ্ছে থিম্পু। সাউথ ব্লকের বক্তব্য, ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, “ভুটান অন্য কোনও দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ালে তা নিয়ে অভিযোগ করার কিছু নেই। কিন্তু ভারতের স্পর্শকাতরতা অগ্রাহ্য করে যে ভাবে তারা এগিয়েছে, তা মানা যায় না।” পাশাপাশি থিম্পুকে যে অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়, তা তারা কী ভাবে খরচ করছে, তার মধ্যেও স্বচ্ছতা নেই বলে সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছে অর্থ মন্ত্রক। এই জট খোলার চেষ্টা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.