|
আইবিএল ফাইনালে হায়দরাবাদ |
জয়ের ডাবল হ্যাটট্রিক সাইনার
নিজস্ব প্রতিবেদন |
|
হটশটস! হটশটস!
সমর্থকদের নয়। ম্যাচটা জিতে চিৎকারটা বেরিয়ে এল ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের রানির মুখ থেকে। সেমিফাইনালে তুমুল প্রতিপক্ষ বিশ্বের তিন নম্বর জুলিয়েন শেঙ্ককে হারিয়ে। পুণে পিস্টন্সের তারকার বিরুদ্ধে হায়দরাবাদ শটশটসের সাইনা নেহওয়াল ছিলেন ‘ফেভারিট’। হাজার হোক, বিশ্বের চার নম্বরের এটা ঘরের কোর্ট। তবু ম্যাচের আগে কে জানত এত নাটক অপেক্ষা করছিল হায়দরাবাদের গাচ্চিবোলি স্টেডিয়ামে!
৫০-৬০ শটের অবিশ্বাস্য ম্যারাথন একটা র্যালি! অনেক পয়েন্টে এগিয়ে গিয়েও হঠাৎ-ই এতক্ষণের ছন্দ হারিয়ে দ্বিতীয় গেম হারা। ঘরের মাঠে দর্শকদের তুমুল প্রত্যাশার চাপ সামলানোর চ্যালেঞ্জ। এত কিছু সামলে শেষ পর্যন্ত বুধবার শেষ হাসি অবশ্য সাইনারই। |
|
ফের শিকার বিশ্বের তিন নম্বর। শেঙ্ককে হারিয়ে সাইনা। ছবি: পিটিআই। |
আইবিএলে নিজের টানা ষষ্ঠ ম্যাচ ২১-১০, ১৯-২১, ১১-৮ জিতে দলকে ২-০ এগিয়ে দেওয়ার পর তাই স্বস্তির সঙ্গে সাইনা বলে দেন, “দ্বিতীয় গেমে কী হল জানি না! ফোকাসটা হঠাৎ-ই হারিয়ে ফেলেছিলাম। দর্শকদের জন্যই ম্যাচটায় আবার ফেরত আসতে পেরেছি। দারুণ লাগছে জিতে। আশা করছি ফাইনালেও এ রকমই পারফর্ম করতে পারব। ফাইনালে যে দলই সামনে পড়ুক আমাদের দল যে ভাবে খেলছে সে ভাবেই ফাইনালেও নিজেদের সেরাটাই দেব।” নাম না করে কি ভারতের ব্যাডমিন্টন রানি সতর্ক করে রাখলেন দেশের ‘নতুন সাইনা’ পি ভি সিন্ধুকে?
গ্রুপ লিগে শেঙ্ককে হারানোর আত্মবিশ্বাস ছিলই সাইনার। তাই হয়তো এ দিন প্রথম গেমে জার্মান প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দেননি তিনি। র্যালি, স্ম্যাশ আর প্লেসমেন্টে দ্রুত পয়েন্ট তুলে এগিয়ে যান বিশ্বের চার নম্বর সাইনা। শেঙ্কও চাপে ছিলেন বোঝা যাচ্ছিল তাঁর ঘন ঘন আনফোর্সড এরর থেকে। প্রায় ঝড়ের বেগে প্রথম গেম জিতে দ্বিতীয় গেমেও একই দাপট দেখিয়ে এক সময় ১৮-১৩ এগিয়ে যান সাইনা। সরাসরি গেমে ঘরের মেয়ের জয় দেখার আশায় গাচ্চিবোলি স্টেডিয়ামের দর্শকরা যখন প্রায় ফুটছেন, ঠিক তখনই ছন্দ হারিয়ে একের পর এক ভুল করতে শুরু করেন সাইনা। অভিজ্ঞ শেঙ্ক সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ভুল করেননি। টানা দশ পয়েন্ট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় গেম দখল করে নেন পুণে পিস্টন্সের তারকা।
তৃতীয় গেমের শুরুতেই অবশ্য হারানো ছন্দ ফিরে পান দেশের এক নম্বর ব্যাডমিন্টন তারকা। শেঙ্ককে ভুল করাতে বাধ্য করেন দুরন্ত নেট প্লে আর অসাধারণ স্ম্যাশে। ম্যাচ পয়েন্টে ঘণ্টায় ২১১ কিলোমিটারের বিদ্যুৎ-স্ম্যাশ হায়দরাবাদের তারকাকে দুরন্ত জয় এনে দেয়।
এ দিনের সেমিফাইনালের প্রথম সিঙ্গলসে হায়দরাবাদকে এগিয়ে দেন অজয় জয়রাম। বিশ্বের ২৪ নম্বর অজয় ২১-১৭, ২১-১১ হারান বিশ্বের পাঁচ নম্বর ভিয়েতনামের নিগুয়েন তিয়েন মিনকে। গোটা ম্যাচে মিনকে প্রায় দাঁড়াতেই দেননি জয়রাম। পর পর দু’দিন টাই খেলার ধকল থাকলেও প্রথম ম্যাচে অজয়ের এই আত্মবিশ্বাসই হয়তো হায়দরাবাদের এ দিনের ‘থিম’ হয়ে উঠেছিল। যার জোরে তৃতীয় ম্যাচে পুরুষদের ডাবলসে প্রথম গেম হেরেও হায়দরাবাদের গো আর লিমের জুটি হারায় পুণের নিয়েল আর থমাসকে। ৩-০ টাই জিতে ফাইনালে যাওয়া দু’ম্যাচ বাকি থাকতে ওখানেই নিশ্চিত হয়ে যায় সাইনার হটশটসের। |
|
শুরু থেকেই সাইনার ম্যাচটা চাপমুক্ত হয়ে খেলা। উপভোগ করা। |
জুলিয়েন শেঙ্ককে স্ম্যাশ বা ড্রপ শটের মতো ঘাতক শট খেলতে না দিয়ে চাপে রাখা। |
প্রতি ম্যাচে উন্নতি করা। সেমিফাইনালের ম্যাচটা আমার মতে আইবিএলে সাইনার সেরা পারফরম্যান্স।
মধুমিতা সিংহ বিস্ত |
|
পুরনো খবর: ‘সাইনাকে হারানো নয়, আমার লক্ষ্য বিশ্বের এক নম্বর হওয়া’ |
|