১০০ দিনের কাজে গতি নেই, জেলা প্রশাসনের ব্যাখ্যা তলব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত হুগলিতে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে (১০০ দিনের কাজ) আশানুরূপ কাজ হয়নি। এ জন্য সম্প্রতি জেলাশাসকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব সৌরভ দাস। পঞ্চায়েত ভোটকেই এর কারণ হিসেবে জানিয়ে গত শুক্রবার জেলাশাসক মনমীত নন্দা নতুন কাজের পরিকল্পনার খতিয়ান পাঠান সৌরভবাবুকে।
জেলাশাসক বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের কারণে আশানুরূপ কাজ হয়নি। বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে কাজের সম্প্রসারণ ঘটানোর চেষ্টা চলছে। আশা করছি, আগামী মাসগুলিতে ওই প্রকল্পের কাজ গত বারের তুলনায় ভাল হবে।” ওই প্রকল্পের জেলার নোডাল অফিসার পুলক সরকার অবশ্য পঞ্চায়েত ভোট ছাড়াও প্রকল্প গতি না পাওয়ার পিছনে তহবিলের অভাবকেও কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।
গত আর্থিক বছরের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত জেলায় ওই প্রকল্পে কাজ কম পেয়েছেন গরিব মানুষেরা। সেই কারণে আগামী তিন মাসে ওই প্রকল্প রূপায়ণে জোর দিতে ইতিমধ্যেই জেলার ১৮টি ব্লকের বিডিওদের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরের তুলনায় এ বার এই সময় পর্যন্ত হুগলিতে ১০০ দিনের কাজ ৪০ শতাংশও হয়নি। এ বার এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ভাল কাজ হয়েছে আরামবাগ ব্লকে। জেলা প্রশাসনের হিসেবে, গত আর্থিক বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত এই ব্লকে ৮ লক্ষ ৪২ হাজার ৩০৬টি শ্রমদিবস তৈরি হয়। এ বছরে একই সময়ে ওই ব্লকে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। জেলায় শ্রমদিবস হয়েছে ৩৪ লক্ষ। খরচ হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা।
চলতি আর্থিক বছরের গোড়ায় জেলার মোট ২০৭টি পঞ্চায়েতে ওই প্রকল্পে ৬২১০টি কাজ শুরু হলেও এ পর্যন্ত শেষ হয়েছে ২০৭টি। এর মধ্যে ৫৮টি পঞ্চায়েতে কোনও কাজই হয়নি। আগামী তিন মাসে ওই প্রকল্পে মূলত বনসৃজন, গ্রামীণ রাস্তা তৈরি এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে। ওই তিনটি খাতে মোট ৩৫ হাজার ৩১৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।
গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে নতুন বোর্ড গঠিত হয়ে যাওয়ায় এ বার হুগলিতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে সরকারের বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ের মাধ্যমে গতি ফেরানোর ব্যাপারে জেলাশাসক আশ্বাস দিলেও এক বছর আগে ওই প্রকল্পের সঙ্গে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের মেলবন্ধনের উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের একাংশই। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রধানত উপযুক্ত তহবিলের অভাবে ওই মেলবন্ধন গতি পায়নি। তবে, এ বছর আমরা সাড়ে আট হাজার ইন্দিরা আবাস নির্মাণের তহবিল পেয়েছি।”
|