|
|
|
|
প্রশাসনের দ্বারস্থ বালি পঞ্চায়েতের প্রধান |
কর্মী নেই, ব্যাহত ১০০ দিনের কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোঘাট |
ব্লক প্রশাসনের ‘অসহযোগিতা’ এবং ‘উদাসীনতা’য় একশো দিনের প্রকল্পের গতি ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে গোঘাট ১ ব্লকের বালি পঞ্চায়েত এলাকায়। অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং প্রধান ভূমেন্দ্রনাথ রায়। মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, গত তিন বছর ধরে এই পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের প্রকল্প রূপায়ণের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নির্মাণ সহায়ক পদে কেউ নেই। পূর্বতন বিডিও ব্লকেরই এক ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’কে অস্থায়ী ভাবে পঞ্চায়েতের প্রকল্পগুলি রূপায়ণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
কিন্তু নতুন বিডিও গত তিন মাস ধরে সেই কর্মীকে ফের তুলে ব্লকে নিয়ে গিয়ে বসিয়েছেন। ভূমেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, “বিডিও নিজে প্রকল্পটির ব্লক স্তরের ‘প্রোগ্রাম অফিসার’ হয়েও উপযুক্ত ভূমিকা পালন করছেন না। তাঁর অসহযোগিতা ও উদাসীনতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ। প্রধানের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র ব্যক্তিগত সুবিধাভোগীদের জন্য তাঁদের নিজস্ব বনসৃজন বা ফলের বাগান তৈরির কর্মসূচি চলছে। যাবতীয় নির্মাণের কাজ বন্ধ। এ দিকে, নতুন কাজ সৃষ্টি না হওয়ায় পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারাও ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বলে দাবি প্রধানের। গোটা বিষয়টি তিনি একাধিকবার লিখিত ভাবে আরামবাগের মহকুমাশাসক ও হুগলির জেলাশাসককে জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন প্রধান।
এ ব্যাপারে মহকুমাশাসক অরিন্দম রায়ের বক্তব্য, “অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে বলা হয়েছে প্রধানকে। বিডিওকেও বলা হয়েছে পঞ্চায়েতের অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলার সময়টুকু ব্লক বা অন্য কোনও পঞ্চায়েত থেকে এক জনকে তুলে এনে বালি পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দিতে। কিন্তু এখনও কেন এই ব্যবস্থা কার্যকর হয়নি, তা খতিয়ে দেখে শীঘ্রই পদক্ষেপ করা হবে।”
কী বলছেন বিডিও দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস নিজে?
প্রধানের ‘সদিচ্ছা’র প্রসঙ্গ তুুলে তাঁর বক্তব্য, “জরুরি কাজেই ব্লক কর্মীকে পঞ্চায়েত থেকে তুলে আনা হয়েছে। সেই সময়েই প্রধানকে চুক্তিভিত্তিক কারিগরী কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। তা ছাড়া নির্দেশ দেওয়া আছে, কোনও অসুবিধা হলেই ব্লক থেকে কারিগরী কর্মী গিয়ে বিষয়টি দেখবেন।” বিডিও-র আবার আক্ষেপ, “গত তিন মাসে এ সব কিছুই হল না!”
প্রসঙ্গত, বালি পঞ্চায়েত এলাকায় ১৮টি সংসদ। পঞ্চায়েতে নথিভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা (জবর্কাড হোল্ডার) ৩৯০০ জন। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, গত আর্থিক বছরে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ব্লকের অস্থায়ী কর্মীকে দিয়ে একশো দিনের কাজের আওতায় ৪২টি প্রকল্প সম্পূর্ণ করা গিয়েছিল।
১৮টি এখনও চালু আছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের অভাবে যেগুলি থমকে গিয়েছে। গড় কর্মদিবস সৃষ্টি করা গিয়েছে ৫৫ দিন। খরচ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। এই কাজের নিরিখে প্রশাসনের তরফে তাঁদের প্রশংসাও করা হয়েছে বলে দাবি প্রধানের। কিন্তু গত তিন মাসে সব কিছুই অনেকটা শ্লথ হয়ে পড়েছে। প্রধানের বক্তব্য, “চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাত্র একটি আবেদন জমা পড়েছে। এই কর্মী খালি একশো দিনের প্রকল্পই দেখবেন। কিন্তু নির্মাণ সহায়ক বা ব্লকের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পেলে পঞ্চায়েতের নির্মাণ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ তাঁর করার কথা।” আপাতত পরিস্থিতি বদলের আশায় সব পক্ষ। |
|
|
|
|
|