রাস্তায় ধারে নর্দমায় উপর সংসার পেতে বসা বৃদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য বর্ধমান শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করল পুলিশ। সুস্থ হয়ে ওঠার পর তাঁকে সরকারি হোমে পাঠানো হবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম সাবিত্রী কুণ্ডু। কয়েকমাস ধরেই তিনি কাটোয়ার সাহেববাগানের রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের কাছে একটি ঢাকা নর্দমার উপর থাকতে শুরু করেছিলেন। আগে সাহেববাগান এলাকাতেই ওই মহিলার বাড়ি ছিল। এলাকায় তিনি পরিচিত বুধি মাসি নামে। স্বামী বেঁচে থাকাকালীনই সেই বাড়ি বিক্রি করে তাঁরা চলে আসেন ভাড়া বাড়িতে। স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলেকে নিয়ে তিনি সেখানেই থাকতেন। |
কিছুদিন পরে নিখোঁজ হয়ে যায় ছেলে। এরপর কখনও কাটোয়ায় বাপের বাড়িতে, কখনও দুর্গাপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতেন তিনি। বছর চারেক আগে একবার রাস্তায় পড়ে কোমরে আঘাত পান। এরপর আর জায়গা হয়নি কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ওই বৃদ্ধা কখনও কাটোয়া শহরের ঘোষহাট, কখনও কাটোয়ার বাসস্ট্যান্ডে দিন কাটাতে শুরু করেন। কিছু দিন এইভাবে চলার পর কয়েক মাস আগে তিনি আসেন সাহেববাগানে। এই এলাকাতেই বৃদ্ধার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি হলেও পারিবারিক অসুবিধার কারণে তিনি মাকে বাড়িতে নিয়ে রাখতে পারেননি। সাহেববাগান এলাকার বাসিন্দারাই তাঁকে দু’বেলা খাবার ও জল দিতেন।
এই খবর পেয়ে বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা কাটোয়ার এসডিপিও ধ্রুব দাসকে ফোন করেন। এসডিপিওর থেকে ওই বৃদ্ধার বিষয়ে বিস্তারিত খবর পেয়ে পুলিশ সুপার ওই বৃদ্ধার প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর ও তার পরে সরকারি হোমে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার কাটোয়া থানার পুলিশ ওই বৃদ্ধার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে কাপড় ও জুতো দিয়ে আসে। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে গাড়ি করে বর্ধমানের দিকে রওনা হন কাটোয়া থানার পুলিশ কর্মী কৃষ্ণশঙ্কর বিশ্বাস ও মমতা মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন বৃদ্ধার মেয়ে পপি দত্ত ও এক পড়শি।
বুধিমাসি চলে যাওয়ায় মন খারাপ সাহেববাগান এলাকার বাসিন্দাদের। তবে পুলিশের এই উদ্যোগে তাঁরা খুশি। “প্রিয় বুধিমাসি ভাল থাক”, এটাই চাইছেন তাঁরা। |