পুরভোটের আগে প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলের লোকেরা হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি। বুধবার জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে এই অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য নেতা তথাগত রায়।
তথাগতবাবুর দাবি, “১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রাথী প্রশান্ত সাহার বাড়িতে ওই ঘটনার খোঁজখবর করতে গিয়েছিলাম। তখনই ওই ওয়ার্ডের একদল লোক আমাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। এঁরা তৃণমূলের লোক।” তবে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী শঙ্খশুভ্র ঘোষ বলেন, “আমি সেই সময় ওয়ার্ডে ছিলাম না। ঠিক কী ঘটেছে বলতে পারব না।” তবে এসপি ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তথাগতবাবু।
বর্ধমান পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টিতে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। তার মধ্যে ৪, ৭, ১১, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে ও ভয় দেখিয়ে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপির দাবি। বিজেপির জেলা কমিটির সভাপতি দেবীপ্রসাদ মল্লিকের অভিযোগ, “যে সব ওয়ার্ডে আমরা প্রার্থী দিয়েছিলাম, সেখানে প্রতি রাতেই প্রায় ৩০-৪০জন দুষ্কৃতী হানা দিচ্ছিল। প্রার্থীদের না পেয়ে বাড়ির লোকেদের উপর অত্যাচার করেছে তারা। আমরা বারবার পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার কথা জানিয়েছি, কিন্তু লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে ওই ৬টি ওয়ার্ডের প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।” |
তবে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দলের বর্ধমান পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শক্তিপদ মণ্ডলের দাবি, “আমার ওয়ার্ডে দুই জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থীই আমাকে সমর্থন করে নিঃশব্দে তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কেউ তাঁদের জোর করেনি।” প্রসঙ্গত, ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবার অভিযোগ উঠেছে তাঁর দলের তরফেই।
দেবীপ্রসাদবাবু বলেন, “দলের ২৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী দীপাঞ্জন সাহা ও প্রশান্ত সাহা মনোনয়ন না তোলায় তাঁদের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। তাঁদের পরিবারের মহিলাদের উপরেও হামলা চালানো হয়েছে।” দীপাঞ্জনবাবুর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে ও প্রশান্তবাবুর বাড়িতে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় বলেও তাঁর অভিযোগ। তাঁর দাবি, এতে তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। জেলা কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপোধ্যায়ও এ দিন বলেন, “কংগ্রেসের মোট ১১জন মহিলা প্রার্থী রয়েছেন। এঁদের সকলকেই প্রায় ভোটের প্রচার না করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থীদের ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা পাচ্ছি না।”
তবে তৃণমূলের রাজ্য নেতা তথা বর্ধমানের পর্যবেক্ষক অলোক দাস বলেন, “আসলে ভোটে সুবিধা করতে পারবেন না বুঝেই বিরোধী দলের প্রার্থীরা নানা মনগড়া অভিযোগ করছেন।” এসপি বলেছেন, “আমাদের কাছে কিছু অভিযোগ এসেছে। সেগুলিকে খতিয়ে দেখছি।” |