মন্দির-লুঠেরাদের রোখা যাচ্ছে না কেতুগ্রামে।
আগের বেশ কয়েকটি চুরির এখনও কিনারা হয়নি। তারই মধ্যে ফের তালা ভেঙে মন্দিরে চুরি হল বর্ধমানের কেতুগ্রামে। এ বার একই রাতে দু’টি মন্দিরে। আগের মতো এ ক্ষেত্রেও পুলিশ এখনও অন্ধকারে।
কেতুগ্রামের দধিয়ায় বৈষ্ণব সাধক গোপাল দাস বাবাজির রাধাকৃষ্ণ মন্দির থেকে মঙ্গলবার রাতে গয়না-সহ নানা জিনিস এবং পাণ্ডুগ্রামে দুর্গা মন্দির থেকে বাসনপত্র চুরি যায়। ঘটনাস্থলে গেলেও পুলিশ কোনও সূত্র পায়নি বলে কেতুগ্রাম থানা সূত্রে খবর।
গত কয়েক মাস ধরে কেতুগ্রামের নানা এলাকায় একের পর এক মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটছে। ২২ জুন নিরোল গ্রামে গুপ্ত পরিবারের কামাখ্যা মন্দিরে তালা ভেঙে প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন অষ্টধাতুর মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি, দেবীর গয়না ও কষ্টিপাথরের শালগ্রাম শিলা চুরি যায়। |
৪ জুলাই একই কায়দায় অট্টহাস আশ্রমের মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তি চুরি করে দুষ্কৃতীরা। তার কয়েক মাস আগে গোপালপুর ও মৌগ্রামে দু’টি মন্দির থেকে মূর্তি খোয়া যায়। সিআইডি-র বিশেষজ্ঞেরা নিরোল ও অট্টহাসে গিয়ে ছবি, হাতের ছাপ সংগ্রহ করেন। কুকুর নিয়ে গিয়েও তদন্ত হয়। পুলিশ বেশ কয়েক জনকে জেরাও করে। কিন্তু চুরি যাওয়া মূর্তি বা চোর, কোনও কিছুরই হদিস মেলেনি।
বুধবার সকালে দধিয়ার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের পুরোহিত প্রথম চুরির ঘটনা খেয়াল করেন। পুলিশ জানায়, লোহার দরজার তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকেছিল। মন্দির কমিটির অভিযোগ, রাধাকৃষ্ণের মূর্তির মুকুটের রুপোর চুড়া, পিতলের বাসনপত্র, সংকীর্তনের সরঞ্জাম খোয়া গিয়েছে। পাণ্ডুগ্রামের দুর্গা মন্দিরের সেবাইতদের অভিযোগ, রাতে গুদামঘরের দরজার তালা ভেঙে বাসনপত্র, পুজোর ও সংকীর্তনের জিনিস নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
কেতুগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, চুরি রুখতে কেতুগ্রামের নানা মন্দির কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করেছিল পুলিশ। সিদ্ধান্ত হয়, মন্দিরে নৈশ প্রহরী রাখার ব্যবস্থা করবে মন্দির কমিটিগুলি। দধিয়ার মন্দিরে মঙ্গলবার রাতে যিনি পাহারার দায়িত্বে ছিলেন, সেই রাখহরি ঘোষ পুলিশের কাছে দাবি করেন, সন্ধ্যা থেকে তিনি মন্দিরে ছিলেন। কিন্তু গভীর রাতে বৃষ্টি শুরু হলে বাড়ি চলে যান। পুলিশের অনুমান, চুরি হয়েছে ভোরের দিকে। বর্ধমানের এক পুলিশকর্তা বলেন, “মন্দিরে চুরি কেন রোখা যাচ্ছে না, কেতুগ্রাম থানার কাছে তা বিশদে জানতে চাওয়া হবে।” |