পদচ্যুত মেয়র পারিষদের দফতর বণ্টন নিয়ে বিতণ্ডা
লীয় মেয়র পারিষদের অপসারণ নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে কাজিয়া শুরু হয়েছিল আগেই। এ বার মেয়র পারিষদের দফতর বণ্টনকে কেন্দ্র করে বাড়ল সেই দ্বন্দ্ব।
অপসারিত মেয়র পারিষদ গোলাম সরওয়ারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরটিকে দেওয়া হয়েছে আর এক কংগ্রেস মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলামকে। বুধবার এ নিয়ে দলেরই কাউন্সিলর ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে পরস্পরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। রবিউল ইসলামকে সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর ফিরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দলের প্রদেশ কমিটির সম্পাদক আকাশ মুখোপাধ্যায়।
কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পরিচালিত আসানসোল পুরসভায় গত শুক্রবার মেয়ার পারিষদ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় গোলাম সরওয়ারকে। পদে থেকে তিনি বোর্ডের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলার কারণেই মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এমন পদক্ষেপ করেন বলে পুরসভা সূত্রে জানা যায়। এর পরেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ করেন গোলাম-অনুগামী কাউন্সিলর ও নেতা-কর্মীরা। তাঁরা পুরবোর্ড থেকে সমর্থন প্রত্যাহারেরও দাবি তোলেন। তবে এখনই এমন পদক্ষেপ করা উচিত কি না, সে নিয়ে কংগ্রেস কাউন্সিলর ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিমত তৈরি হয়। পুরো বিষয়টি প্রদেশ নেতৃত্বকে জানায় দু’পক্ষই। আগামী ৩১ অগস্ট দলের আসানসোলের ১২ জন কাউন্সিলরকে কলকাতায় বৈঠকে ডেকেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। দু’পক্ষকেই কোন্দল এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেন প্রদেশ নেতৃত্ব। কিন্তু কার্যত তা মানা হয়নি।
মঙ্গলবার পুরসভার সামনে বিক্ষোভ করে কংগ্রেসের একাংশ। বুধবার সেই ক্ষোভ আরও বাড়ে, যখন তাঁরা জানতে পারেন গোলাম সরওয়ারের অধীনে থাকা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরটি রবিউল ইসলামকে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা দফতর আর এক কংগ্রেস কাউন্সিলর শিবপ্রসাদ বর্মণকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পুরসভার বরো চেয়ারম্যান তথা দলের আসানসোল ব্লক সভাপতি মানস দাস প্রশ্ন তোলেন, প্রদেশ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ছাড়া রবিউল কী ভাবে অপসারিত মেয়র পারিষদের দফতর গ্রহণ করছেন। মানসবাবুর দাবি, “এটা শৃঙ্খলাভঙ্গ। তৃণমূলের তাঁবেদারি করতে গিয়ে দলকে দুর্বল করছেন ওঁরা।” তিনি জানান, প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে এ ব্যাপারে নালিশ করেছেন তাঁরা। কংগ্রেস কাউন্সিলরদের পরিষদীয় দলনেতা শিবপ্রসাদ বর্মণেরও বক্তব্য, “আমাদের সঙ্গে কোন আলোচনা না করেই রবিউলবাবু দফতরটি নিয়েছেন। দফতর বণ্টনের আগে মেয়রও কোনও আলোচনা করেননি।” তাঁর আরও দাবি, দফতর গ্রহণের আগে, দলের ঐক্য ও সম্মানের কথা রবিউল ইসলামের ভাবা উচিত ছিল। শিক্ষা দফতর তাঁকে দেওয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে শিবপ্রসাদবাবু বলেন, “প্রদেশ নেতারা যা নির্দেশ নেবেন, আমি তা মানব।”
রবিউল ইসলাম গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা কংগ্রেস নেতা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় তাঁর পক্ষ নিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু দফতরের কাজ এক দিনও ফেলে রাখা সম্ভব নয়। তা ছাড়া এই দফতর সম্বন্ধে রবিউল ইসলামের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তাঁকে সেটি দেওয়া হয়েছে। দলের সঙ্গে আলোচনা না করে এই দফতর হাতে নেওয়া রবিউলের উচিত হয়নি বলে দল ও কাউন্সিলারদের একাংশ যে অভিযোগ করছেন, সে ব্যাপারে ডেপুটি মেয়র-ও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এই পরিস্থিতিতে রবিউল ইসলামকে ওই দফতরের দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সম্পাদক আকাশবাবু। তিনি বলেন, “প্রদেশ সভাপতির বৈঠকের আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।” তাঁর দাবি, পুরসভার তৃণমূলের মেয়র ও চেয়ারম্যান কংগ্রেসের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টায় মেতেছেন। তা বুঝে উঠতে পারছেন না কংগ্রেস কাউন্সিলরদের একাংশ। কড়া হাতে কাজিয়ে হাতে বন্ধ করা হবে বলে জানান তিনি। মেয়র তাপসবাবু আকাশবাবুর অভিযোগের প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, কংগ্রেসের কার্যকলাপ নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যথা নেই।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.