উদ্বোধনের সাত বছর পরেও বেহাল বাইপাস
লাকার বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছিল রাস্তা। উদ্দেশ্য ছিল যানজট কমানো। বছর সাতেক আগে ঘটা করে উদ্বোধনও হয়। কিন্তু তার পরেও চালু হল না রানিগঞ্জের রানিসায়ের মোড় থেকে বার্নস মোড় পর্যন্ত বাইপাস রাস্তা। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে বলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ভাঙা রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে বাড়ছে দুর্ঘটনা।
২০০৬ সালে দূরপাল্লার বাস এবং ভারী যান চলাচলের সুবিধার জন্য রানিগঞ্জের রানিসায়ের মোড় থেকে বার্নস মোড় পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার ওই বাইপাস রাস্তা তৈরি করেছিল এডিডিএ। উদ্দেশ্য ছিল, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগ করে যানজট কিছুটা হলেও কমানো। তখন এডিডিএ-র চেয়ারম্যান ছিলেন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। সাংসদ বিকাশ চৌধুরির মৃত্যুর পর যে উপনির্বাচন হয় তাতেই সাংসদ হিসেবে প্রথম লড়েন বংশবাবু। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে উপনির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি ওই রাস্তাটি নির্মাণ করে উদ্বোধন করা হয়। ফলেই এমন হাল ওই রাস্তার। এর পর থেকে রাস্তার আর কোনও সংস্কার হয়নি বলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ।

রানিসায়র মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।
২০০০ সালের পরে রানিগঞ্জ শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তা নেতাজি সুভাষ রোড ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তবে জায়গার অভাবে শহরের মধ্যে চার কিলোমিটার রাস্তা চওড়া করা যায়নি। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, বীরভূমে সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও জরুরি এই রাস্তা। রাস্তার ধারে রয়েছে ১২টি ব্যাঙ্ক। ৬টি স্কুল এবং দু’টি কলেজের পড়ুয়ারাও এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে। এছাড়া রাস্তার উপর একটি নার্সিংহোম, ভূমি রাজস্ব দফতর, রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর, টেলিফোন কেন্দ্র এবং প্রধান ডাকঘর হওয়ায় প্রতিদিনই অজস্র মানুষ যাতায়াত করেন। চলাচল করে ১৩৭টি মিনিবাস এবং ৮০টি বড় বাসও। দক্ষিণবঙ্গ বণিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি রাজু খেতান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা দাবি জানিয়ে আসছি ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক বিধি মেনে শহরের ভিতর দিয়ে যেতে পারে না। বাইপাস দিয়েই ২ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হয়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের অন্য প্রান্তের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এডিডিএ, জেলা প্রশাসন এবং পূর্ত দফতরকেও জানিয়েছি।” এরপরেও কাজ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁর দাবি, ২০০৬ সালে বাইপাস রাস্তাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও বাস্তবে তা চালু হয়নি। এর জেরে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। আসানসোল মহকুমা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায়ের ক্ষোভ, “বাইপাস চালু না হওয়ায় ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে আমাদেরও।” রানিগঞ্জের পুরপ্রধান অনুপ মিত্র জানান, এই বাইপাস চালু করা হয়েছিল যানজট সমস্যা মেটানোর জন্য। আবার যাতে তা চালু হয় সে বিষয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে বারবার অনুরোধ করছেন।
বংশগোপালবাবু জানান, ওই রাস্তাটি তৈরি করা হয় যানজট সমস্যা মেটানোর জন্য। কিন্তু কিছু দিন পরেই ধসে রাস্তার একটা অংশ বসে যায়। বাস্তুকারেরা তখন মাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ৮০ লক্ষ টাকার একটি দরপত্রও ডাকা হয়েছিল এডিডিএ-র তরফে। তবে সরকার বদলের পরে কাজ কেন হয়নি তা তিনি জানেন না। তৃণমূল নেতা গোপাল আচার্যের দাবি, “লোকসভা উপনির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করতেই যে তড়িঘড়ি এই রাস্তা নির্মাণ ও উদ্বোধন করা হয়েছিল তা বংশবাবুর কথাতেই পরিস্কার। কারণ মাটি পরীক্ষা না করেই অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যে এই কাজ হয়েছে তা বংশবাবু নিজেই বলছেন।” এডিডিএ-র বর্তমান চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ব্যাপারটা আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।”
রানিগঞ্জবাসী এখন অপেক্ষায় কবে ভাঙা রাস্তা মেরামত করে চালু হবে বাইপাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.