রাজাদের শহর সম্প্রসারণের ব্যাপারে উদ্যোগী পুরসভা। সম্প্রতি ওই ব্যাপারে প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। তাতে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকাকে পুরসভা এলাকাভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় কোচবিহার শহরতলির গুড়িয়াহাটি ১ ও ২ নম্বর খাগরাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাংশ এলাকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কোন কোন এলাকা সংযোজিত হবে সে ব্যাপারে তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকঠাক চললে এক বছরেই শহরের আয়তন বাড়ানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছেন পুরসভা-কর্তৃপক্ষ।
তৃণমূল কংগ্রেসের পুর চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা আরও ১০টি বাড়ানো হবে। খুব শীঘ্রই সংযোজিত এলাকার রূপরেখা চূড়ান্ত করে রাজ্য পুর দফতরে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।” উল্লেখ্য, বর্তমানে শহরের ওয়ার্ড সংখ্যা ২০টি।
পুরসভা সূত্রের খবর, এক বছর আগে পুর এলাকা সম্প্রসারণের একটি প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়। সেই সময় ওই প্রস্তাব অনুমোদন পায়নি। চলতি মাসে কংগ্রেস ছেড়ে সদলবল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর চেয়ারম্যান বীরেনবাবু ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ফের উদ্যোগী হন। এমনকী ওই ব্যাপারে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে এক প্রস্ত কথাও হয়েছে বলে চেয়ারম্যানের দাবি। চেয়ারম্যান জানান, শহরের চার দিকেই এলাকা সম্প্রসারণের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে। উত্তরে খাগরাবাড়ি, পূর্বে হরিণ চওড়া, দক্ষিণে গুড়িয়াহাটি ও পশ্চিমে তোর্সা বাঁধ রয়েছে। পুরমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। আরও বেশি মানুষ পুর পরিষেবার আওতায় আসবেন। |
প্রায় ১২৫ বছর আগে টাউন কমিটির মাধ্যমে কোচবিহারে নাগরিক পরিষেবার বন্দোবস্ত হয়। বর্তমানে শহরের জনসংখ্যা বেড়ে প্রায় এক লক্ষ হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহন সংখ্যাও। শহরের আয়তন বাড়েনি। ফলে যানজট থেকে নাগরিক পরিষেবা ঘিরে দুর্ভোগে পড়ছেন পুর-বাসিন্দারা। শহরের বিভিন্ন রাস্তার একমুখিকরণ-সহ নানা প্রকল্পের কাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির আনুপাতিক হারে আর্থিক বরাদ্দ মিলছে না বলেও অভিযোগ। চেয়ারম্যান বলেন “শহর সম্প্রসারণ হলে কোচবিহার পুরসভা ‘গ’ শ্রেণির পুরসভায় উন্নীত হবে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি আর্থিক বরাদ্দ মিলবে।”
পুর-উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধীরা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহা বলেন, “বাম আমলে আইনি জটিলতায় ‘গ’ শ্রেণির পুরসভায় উন্নীতকরণের বিষয়টি সফল হয়নি। আমরাও চাই দ্রুত ওই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হোক। পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে পুর কর্তৃপক্ষের উচিত সর্বদল বৈঠক ও নাগরিক সভা করে রূপরেখা তৈরি করা।” ফব-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য প্রাক্তন কাউন্সিলর দেবাশিস বণিক বলেছেন, “শহরের এলাকা বাড়ানো আমাদের পুরানো দাবি। তা বাস্তবায়িত হলে ভাল হবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের ওই উদ্যোগ কতটা আন্তরিক তা সময় বলবে।” |