বিক্রি বাড়লেও ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দু’বছরে নতুন কোনও মদের দোকান খোলার লাইসেন্স দেয়নি। কিন্তু মদ্যপায়ীদের পানপাত্র যাতে শুকনো না থাকে, সে জন্য বেশ কয়েক’টি নতুন বটলিং প্ল্যান্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে আবগারি দফতর। মঙ্গলবার বিধানসভায় এ কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করেছেন, এতে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।
অর্থমন্ত্রী জানান, আদালতের নির্দেশে সাতটি দেশি মদের দোকান খোলার লাইসেন্স দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। নিজে থেকে কোনও ‘অন’ বা ‘অফ শপ’ খোলার লাইসেন্স দেয়নি। কিন্তু সরকার কেন লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানের সংখ্যা বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর পথে হাঁটছে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের নীতি জানতে চান। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্য তিনি মন্তব্য করেন, “লাইসেন্স দেওয়া না হলে বেআইনি মদ-সহ চোলাই মদের বিক্রি বাড়তে পারে।”
অর্থমন্ত্রী সরাসরি এর উত্তর না দিয়ে বলেন, “এ বিষয়ে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির পরামর্শ মতোই আবগারি দফতর চলছে। দোকানের সংখ্যা না বাড়লেও মদের জোগানে যাতে ঘাটতি না হয়, সে জন্য ‘বটলিং প্ল্যান্ট’ খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কারখানা খোলার জন্য যে ক’টি আবেদন জমা পড়েছিল, সব ক’টিই অনুমোদন পেয়েছে।” অমিতবাবু জানান, রাজ্যের একটি মাত্র ‘এক্সটা নিউট্রাল অ্যালকোহল’ (ইএনএ) তৈরির কারখানা থেকে চাহিদার মাত্র ২০% মেলে। বাকি ৮০% আসে অন্য রাজ্য থেকে। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ইএনএ কারখানা করার জন্য সরকারের কাছে ছ’টি সংস্থা আবেদন করেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনুমোদন পাওয়া বটলিং কারখানার মধ্যে পাঁচটি উৎপাদন শুরু করেছে। অর্থমন্ত্রীর দাবি, “সরকারের এই উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি চোলাই মদের বিক্রিও কমবে।”
আবগারি কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে এখন অর্থমন্ত্রীর অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এই দফতর। মগরাহাটে বিষমদ কাণ্ডের পরে পুলিশ এবং আবগারি দফতর রাজ্যজুড়ে অভিযান চালিয়ে
বাজেয়াপ্ত করেছে লক্ষ-লক্ষ লিটার চোলাই মদ, চোলাই তৈরির কাঁচা মাল, এমনকী নকল দেশি-বিদেশি মদও। কর্তাদের দাবি, ধারাবাহিক অভিযানে চোলাই মদের চালান অনেক কমেছে। অনুমোদিত দোকানগুলিতে দেশি-বিদেশি মদের বিক্রিও বেড়েছে। এই কারণেই আরও বেশি সংখ্যায় বটলিং কারখানা খোলার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত দেশি ও বিদেশি মদের দোকানের সংখ্যা যথাক্রমে ১৮৭০ এবং ২২৪৩টি। তবে সব মিলিয়ে এই ৪১১৩টি দোকানের মধ্যে চালু
রয়েছে ৩৯১৯টি। |